রাজধানীতে বসে মিথ্যাচার ও শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছে। ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বক্তব্য দেয়ার পরপরেই তাঁকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় মিথ্যাচারের অভিযোগে মশাল মিছিল ও নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেরোবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, ‘ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।’
মশিউর রহমান অভিযোগ করেন, ‘নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমত পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক প্রশাসনিক পদ দখল ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন, উপাচার্যের অনুমোদিত ও অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেইনিং, ঢাকাস্থ লিয়াজো অফিসে অতিরিক্ত খরচ, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, চরম শিক্ষক সংকটসহ নানান অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িত।’
‘গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকায় বসে মিথ্যাচার করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তার দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পর অভিযোগ করেছি। কিন্তু তিনি সংবাদ সম্মেলনে আগের ভিসিকে দোষ দিচ্ছেন। তাহলে দুই বছরে তিনি কি করলেন। তার সময়েই তো নকশা পরিবর্তনসহ যত দুর্নীতি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয় দের দিয়ে ভার্সিটি ভরিয়ে ফেলেছেন। নিজের কাছের লোক দিয়ে যতসব অনিয়ম করেই চলেছেন’।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ভিসি সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন৷ স্পিকারসহ অনেকের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এমনকি ইউজিসি বিষয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। সরকারের উন্নয়নসহ সবকিছু বিষয়েই তিনি বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন। তাই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো।
এদিকে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল ও কলিমুল্লাহর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ । বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল শেষে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এসময় তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।
কুশপুত্তলিকা দাহ শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া অতিসত্তর উপাচার্যের অনিয়ম দুর্নীতির শাস্তি দাবি করে বলেন, তার দুর্নীতির তদন্ত করায় শিক্ষামন্ত্রীসহ ইউজিসির বিরুদ্ধে ঢাকায় বসে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পে তিনি অনিয়ম করেছেন উলটা তিনি সরকারের বিভিন্ন মহলের বিরুদ্ধে বিষাদগার করছেন। আমরা চাই অতিসত্তর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, বর্তমান উপাচার্য দিনের দিনের পর ঢাকায় থেকে লিয়াজোঁ অফিসের নামে অনিয়ম দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করলেই হামলা মামলা দিয়ে যাচ্ছেন৷ আজ তিনি সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তাকে জাতির উদ্দেশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে নইলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
এবি/রাতদিন