জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের রংপুর-৩ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে। ফলে যে কোন দিন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে কমিশন।
এ অবস্থায় ব্যানার-ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে রংপুর মহানগরী। উপনির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি এই তিন প্রধান রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা জোরে সোরেই শুরু হয়েছে।
যদিও প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগের একজন, জাতীয় পার্টির দু’জন ও বিএনপির দু’জনকে মাঠে দেখা গেছে, তবে প্রধান এই তিন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী সংখ্যা প্রায় ২৭।
এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে সব দলেই দেখা যাচ্ছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নগরজুড়ে আওয়ামী লীগের অন্তত ২০ সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টাম-লীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি শাফিয়ার রহমান শাফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, মহানগর শ্রমিক লীগ সভাপতি এম এ মজিদ, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. দেলোয়ার হোসেন, শ্রমিক লীগ নেতা আবদুস সোবহান, সাবেক নারী সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুসহ অনেকেই রয়েছেন এই তালিকায়।
আ.লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে এরই মধ্যে মাঠে কোমর বেঁধে নেমেছেন আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী খালেকুজ্জামান। তার পক্ষে প্রায় প্রতিদিনই চলছে প্রচার মিছিল, শোডাউন। তাকে প্রার্থী করার দাবিতে চলছে মোটরসাইকেল শোডাউন, মানববন্ধন আর মিছিল।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, মহানগর সভাপতি শাফিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর লবিং চালাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বলেছেন, তাকে রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দেয়া উচিত।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসিরের পক্ষে ব্যাপক শোডাউন করা হয়েছে। তার পক্ষে নগরীর প্রতিটি স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। তিনিও প্রতিটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অন্যদিকে জেলা জাপার যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রাজ্জাকও মনোনয়ন চাইছেন। অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে, রওশন এরশাদ চাইছেন এ আসনে তার ছেলে শাদ এরশাদকে মনোনয়ন দিতে। সমর্থকরা এখানে দলের ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন চাইছেন।
তবে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই ঠিক করবেন কে প্রার্থী হবেন।
এদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইছেন মহানগর সভাপতি মোজাফফর হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান শামু ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা। তাদের মধ্যে মোজাফফরের পক্ষে প্রার্থী হিসেবে সরাসরি না বলে দোয়া কামনা করে নগরীতে ব্যাপক পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। আবার বাবলার পক্ষে সরাসরি ধানের শীষের প্রতীক লাগিয়ে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী যাচাই করার জন্য দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি টিম রংপুর সফর করে গেছেন। তারা দলের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েছেন।
রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচন নিয়ে সারাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের উল্লেখযোগ্য কারণ, এ আসনে এর আগে এরশাদ কখনই পরাজিত হননি। এরশাদের অনুপস্থিতিতে জাপা কি পারবে এ আসনটি ধরে রাখতে এ প্রশ্নের উত্তর জানতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।