রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনিয়াবাসি আবারো তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা। পানি বাড়া শুরু হতে না হতেই সৃষ্ট এই ভাঙ্গন রক্ষায় স্থানীয় চেয়াম্যানের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় দেয়া গ্রোয়েন বাঁধটিও ভেঙে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনোভাবেই ভাঙন প্রতিরোধে সেখানে কাজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
আজ রোববার, ২২ মে সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার ডান তীরে কোলকোন্দ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিনবিনা পশ্চিম পাড়ায় ডান তীর রক্ষা বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন ধরেছে। ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, বাঁশের ঝাড়, জমি-জমা, বসতবাড়ি। প্রায় মাস দুয়েক আগ থেকে সেখানে ভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে ভুক্তভোগীদের সহায়তায় স্বেচ্ছায় গ্রোয়েন বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু সেটিও ভাঙনের মুখে পড়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, বেড়িবাঁধটির পূর্বের অংশে ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। এখন খৈখাওয়া অংশে ভাঙন ধরেছে। যদি এই ভাঙ্গন রোধ করা না যায় তাহলে খৈখাওয়া, পাঙ্গাটারী, মধ্যপাড়া, আমিনগঞ্জসহ আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামে ভাঙন ছড়িয়ে পড়বে। আউলিয়া বাজার, বিনবিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এমনকি তারা ফোনও ধরছেন না।
তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে গ্রোয়েন বাঁধ দু’টিসহ বেড়িবাঁধটি জরুরী ভিত্তিতে জিওব্যাগ দিয়ে রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছেন। তা না হলে এই এলাকার চার হাজার বাড়িঘর ভাঙন হুমকিতে পড়বে। হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
ওই এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, এই বাঁধটি ভেঙে গেলে পাশেই খৈখাওয়া এলাকায় অবস্থিত সমবায় ভিত্তিতে গড়ে তোলা ২০০ একর জমির মৎস খামার নষ্ট হয়ে যাবে। এতে এই খামারের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৫০০ পরিবারের জীবিকা নিয়ে হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি জানান, শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও এসেছিলেন পরিদর্শনে। কিন্তু তিনি বাধ রক্ষার কোনো আশ্বাস দেননি।
এ ব্যাপারে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, শনিবার ভাঙন এলাকার সর্বশেষ পরিস্থিতি একজন এসও গিয়ে দেখে এসেছেন। ভাঙন কবলিত বিনবিনিয়া এলাকায় একটি টেকসই বাঁধ নির্মানের প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।