ভারতকে যেভাবে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়েছে। প্রবৃদ্ধি, বর্ধিত বিনিয়োগ, জীবনমান, স্বাক্ষরতা এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরে এ মন্তব্য করেছেন করণ থাপর। কীভাবে বাংলাদেশ এগিয়েছে সেটির একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে শনিবার দি হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে কলামটি।

বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়েছে। প্রবৃদ্ধি, বর্ধিত বিনিয়োগ, জীবনমান, স্বাক্ষরতা এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরে এ মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সাংবাদিক, উপস্থাপক ও লেখক করণ থাপর। কীভাবে বাংলাদেশ এগিয়েছে সেটির একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে শনিবার দি হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে কলামটি। এই নিবন্ধটির একটি বাংলা ভার্সনও ছাপিয়েছে বাংলা ট্রিবিউন।

“দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট: দ্য আনটোল্ড স্টোরি” বইয়ের এই লেখক সত্তর দশকের বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে বলেন, “এখন বাংলাদেশ একটি ভিন্ন দেশ। দেশটির বিষয়ে বিশ্বের অভিমত হয়তো খুব ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে। যদিও আমি এই বিষয়ে নিশ্চিত নই। কিন্তু ভারতে আমাদের ১৯৭০-এর দশকে আটকে থাকার কোনও মানে হয় না। তারপরও গত সপ্তাহে ভারতের এক প্রতিমন্ত্রী যা বলেছেন তাতে সেটাই স্পষ্ট হয়।”

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি বাংলাদেশ বিষয়ে মন্তব্য করেন। নাগরিকত্বের প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ খালি হয়ে যাবে- রেড্ডির এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে করণ থাপর বলেন, “কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যের কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশের সত্যিকার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। আরও খারাপ হলো, তিনি জানেন না ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে ভালো করছে, বিশেষ করে জীবনযাপনের মানের ক্ষেত্রে।”

প্রবৃদ্ধিতে ভারত ৫ শতাংশের নিচে আর বাংলাদেশ ৮ শতাংশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। করন থাপর বর্তমানে দ্য ওয়্যার’র সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, “অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ২০১৯ অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়েছে, ভারতের কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।”

করণ থাপর বাংলাদেশ ও ভারতের নারী-পুরুষদের সম্ভাব্য আয়ুষ্কালের নজির তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশে পুরুষ ও নারীদের সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল যথাক্রমে ৭১ ও ৭৪ বছর। ভারতে হলো ৬৭ ও ৭০ বছর।”

শিশু মৃত্যুর হারের দিক থেকেও এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। নারীদের অগ্রগতির দিক থেকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি নারীদের ৭১ শতাংশ সাক্ষর। আর ভারতে তা ৬৬ শতাংশ। বাংলাদেশে শ্রমে নারীদের অংশগ্রহণ ৩০ শতাংশ এবং তা বাড়ছে। আমাদের ২৩ শতাংশ এবং গত দশকে তা কমেছে ৮ শতাংশ।”

করণ থাপর উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির অনুপাতের বিষয়টিও তুলে ধরেন যেখানে ভারতের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, “আমরাই পিছিয়ে পড়ছি।”

উপসংহারে তিনি বলেন, “রেড্ডিকে কারও এই কথা মনে করিয়ে দেওয়া উচিত, যুক্তরাষ্ট্র যদি নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেয় তাহলে অর্ধেক ভারত খালি হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে তা আরও বেশি হবে। সে যাই হোক, ঘটনা হলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের দরজা বন্ধ রয়েছে কিন্তু তাতে করে আমাদের ঠেকানো যাচ্ছে না।”

এইচএ/রাতদিন