মসজিদে হলো ৩০ মরদেহের ময়নাতদন্ত!

ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৩০ জনের মৃত্যু হয়। টানা বৃষ্টিপাত ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে নেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে মসজিদের ভেতরেই করা হলো ময়নাতদন্তের কাজ। এক, দুইজন নয় নারী ও শিশুসহ ৩০ জনের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে সেই মসজিদে।

মূলত, মসজিদ কর্তৃপক্ষই স্থানীয় প্রশাসনকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিজেদের প্রার্থনালয় ছেড়ে দিয়ে এই অনন্য নজির গড়েছে ওই মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ আগস্ট এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর কেরালার মালাপ্পুরাম জেলার কাছে নিলম্বুর গামে।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্যে টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে দুর্ভোগে পড়ে জনসাধারণ। শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন হয়ে পড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর। এ সময় কয়েক এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।

গত ৮ আগস্টে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় কাবালাপ্পারা এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৩০ জনের মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের অবস্থান দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে। এতো দূরে মরদেহগুলো নিতে গিয়ে বিপাকে পড়ে স্থানীয় প্রশাসন। এসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কাবালাপ্পারা এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি মসজিদ।

তাই গত বুধবার, ১৪ আগস্ট সেই মসজিদের ভেতরেই ৩০টি দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে চিকিৎসকরা।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ এমন ভূমিকা নেয়ায় তাদের প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। সংবাদটি বিভিন্ন ভারতীয় দৈনিকে আসার পরে দেশজুড়েও ভূয়সী প্রশংসিত হয় তারা।

প্রসঙ্গত টানা বৃষ্টি ও এর ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ভারতের ৯টি রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় কেরালায় ৯৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ৫৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

কেরালায় মাত্র তিন দিনেই বৃষ্টি ও বন্যাজনিত কারণে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল এনডিটিভি। এ ছাড়া পাশের রাজ্য কর্ণাটকে বন্যায় ৫৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র মিলে এবারের বন্যায় ৯১ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বন্য কবলিত এলাকাগুলোতে থেকে লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এবি/রাতদিন