রংপুরে আবারও ত্রাণের দাবিতে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

রংপুরে কর্মহীন মানুষের আহাজারি দিন দিন বাড়ছে। মহামারি করোনার প্রভাবে অবরুদ্ধ নগরে বসবাসকারী অসহায় মানুষেরা যেন ততোধিক বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পেটের ক্ষুধায় বাকরুদ্ধ এসব মানুষ নেমে আসছে রাস্তায়। ত্রাণের অপ্রতুলতা নাকি বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটি এসব অন্নহীন মানুষ সেটা বুঝতে চাইছে না, তারা শুধু জানে ত্রাণ সহায়তার পথচলা তাদের দুয়ার পর্যন্ত পৌছায়নি।

দিন দিন পেটের ক্ষুধার জ্বালা বাড়ায় অনাহারি-অর্ধাহারি মানুষরা বাধ্য হচ্ছে ঘর ছেড়ে বাহিরে আসতে। আজও বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল রংপুর মহানগরীর বেশ কিছু জায়গায় ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ত্রাণবঞ্চিত এসব মানুষ।

আজ দুপুরে নগরীর ১৫, ২৮, ৩১ ও ৩২নং ওয়ার্ডের ত্রাণ বঞ্চিতরা প্রশাসনের লকডাউন অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন। এসময় তারা ‘ভাত চাই-খাবার চাই’ বাঁচার মতো-বাঁচতে চাই’ শ্লোগানে ত্রাণ সহায়তার জন্য রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলেন।

নগরীর মডার্ন মোড় সড়কের প্রবেশ মুখে অবস্থান নেন কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ।সেখানে সিটি করপোরেশনের ৩১ ও ৩২নং ওয়ার্ডের শেখপাড়া, বারো আউলিয়া, মিলনপাড়া, মোল্লাপাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, মোসলেমপাড়াসহ আশপাশের ত্রাণ সুবিধা বঞ্চিত লোকেরা অংশ নেন।

বিক্ষুদ্ধরা সড়কে বসে দাঁড়িয়ে অবস্থান নিয়ে জরুরি পণ্য সেবাবাহি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে ত্রাণের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন।

এসময় ইউনুছ আলী ও মকবুল হোসেন নামে দুইজন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘করোনা আসি হামরা হাত গোটে বসি আছি। কোনো কাজ কামাই নাই। অভাবের সংসারোত এই ভাইরাস হামাক শ্যাষ করি ফ্যালাইল।’

রিকশা শ্রমিক লিটন মিয়া বলেন, ইসক্যা নিয়্যা বাইরোত ব্যারবার দেয় না। পুলিশ যাত্রীক গাড়ি থাকি নামে দেয়। চাকার হাওয়া ছাড়ি দেয়। ইসক্যার চাকা না ঘুরলে হামরা খামো কি? সরকার ত্রাণ দ্যাওচে, কিন্তুক হামরা তো পাই না। হামাক ভাত দেউক, খাবার দেউক। হামরা ঘরোত থাকমো।

সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে মডার্ন মোড় এলাকায় আসেন তাজহাট মেট্রোপলিটন থানা পুলিশ। এসময় বিক্ষুব্ধরা ওসি শেখ রোকনুজ্জামানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।

জেএম/রাতদিন