রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সকল বধ্যভূমি সংরক্ষণসহ শহীদদের স্বীকৃতি ও পরিবারের সদস্যদের যথাযথ মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ।
সোমবার, ৪ এপ্রিল দুপুরে দখিগঞ্জ বধ্যভূমি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ দাবি জানান রংপুরের বিশিষ্টজনরা।
দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোজাহার আলী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি শিক্ষাবিদ বনমালী পাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা রামকৃষ্ণ স্বোমানী, বিশিষ্ট সংগঠক ও গবেষক ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু, দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেবদাস ঘোষ দেবু ও কোষাধ্যক্ষ পলাশ কান্তি নাগ।
এসময় পরিষদের সভাপতি সুশান্ত ভৌমিক অবিলম্বে দখিগঞ্জ শ্মশান বধ্যভূমিতে গণপূর্ত থেকে নির্মাণাধীন অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভের কাজ শেষ করার দাবি জানান। একই সঙ্গে আগামী বছর থেকে একযোগে রংপুর জেলার প্রতিটি বধ্যভূমিতে গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩ এপ্রিল রংপুরে এক অকল্পনীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল। ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভ্যানে করে রংপুর-মাহিগঞ্জ সড়কের দখিগঞ্জ শ্মশানে ১১ জন স্বাধীনতাকামী মানুষকে চোখ ও হাত বেঁধে আনা হয়েছিলো। সেদিন মধ্যরাতে তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী হায়েনারা। ওই ১১ জনের মধ্যে অলৌকিতভাবে প্রাণে বেঁচে যান দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে মন্টু ডাক্তার।
ঘাতকদের গুলিতে শহীদ হন ন্যাপের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়াই এ মাহজুজ আলী জররেজসহ দুর্গাদাস অধিকারী, ক্ষীতিশ হালদার, এহসানুল হক দুলাল, রফিকুল ইসলাম রফিক, শান্তি চাকী, গোপাল চন্দ্র, তোফাজ্জল হোসেন মহরম, উত্তম কুমার অধিকারী গোপাল ও পাগলা দরবেশ।
এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর রংপুরে প্রথম গণহত্যার ঘটনা।