রংপুরে শিশু গৃহকর্মীর গোপনাঙ্গে খুন্তির ছ্যাঁকা, জজ-চিকিৎসকের নামে মামলা

রংপুরের আদর্শপাড়ায় ১২৫ টাকা চুরির অভিযোগে ১২ বছর বয়সী এক গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি তার গোপনাঙ্গে গরম খুন্তির ছ্যাঁকাও দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একজন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, তার চিকিৎসক স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালিকার নামে মামলা হয়েছে।

গতকাল শনিবার, ৫ ডিসেম্বর রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন গৃহকর্মীর মা । নির্যাতিত শিশুটি নীলফামরীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের এক ভিক্ষুকের মেয়ে।

মামলায় বাসার মালিক নওগাঁয় কর্মরত যুগ্ম জেলা দায়রা জজ রেজাউল বারী রিপন (৪৫), তার স্ত্রী দন্তচিকিৎসক কার্নিজ আফি কান্তা (৩৫), শাশুড়ি খালেদা বেগম (৫৫) এবং শ্যালিকা শাপলা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে।

নির্যাতিত শিশুটি বর্তমানে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ডালিম চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মাসিক এক হাজার টাকা বেতনে মেয়েটিকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজের জন্য রংপুর শহরের আদর্শপাড়া মহল্লার দন্তচিকিৎসক কান্তা বেগম এবং রেজাউল বারী দম্পতির বাসায় দেয়া হয়। প্রায় দুই বছর ধরে সে সেখানে কাজ করতো। ১২৫ টাকা চুরি সন্দেহে গত ২১ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে আসামিরা শিশুটিকে মারধরের পর গোপনাঙ্গে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন। খবর পেয়ে ২৮ নভেম্বর বিকেলে শিশুটির মা রংপুরে ওই বাসায় যান।

এসময় তাকে জানানো হয়, তার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তাকে আর বাসায় রাখবে না। এ অবস্থায় দন্তচিকিৎসক কার্নিজ আফি কান্তা ও তার স্বামী সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে মায়ের হাতে তুলে দেন। গ্রামে ফিরে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে গ্রামবাসীকে বিস্তারিত জানান মা।

ওই গ্রামের বাসিন্দা নুর উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিস্তারিত জানাই। এরপর পুলিশ এসে ৩০ নভেম্বর শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এদিকে গত শুক্রবার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয় মেয়েটিকে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার রাতে মামলা রেকর্ড করা হয়।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এবি/রাতদিন