রংপুর বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। একইসাথে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগেও বেড়েছে মৃত্যু। অন্যদিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে মৃত্যু কমছে। এক মাস আগে দেশে মোট মৃত্যুর অর্ধেক ছিল ঢাকায়। গত এক মাসের মৃত্যুর হিসেবে দেখা গেছে, ৪৪ ভাগ মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়।
একইভাবে গত এক মাসে ১৭ ভাগ মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। যেখানে এক মাস আগে মোট মৃত্যুর ২৫ ভাগের বেশি ছিল চট্টগ্রামে। অন্য দিকে এক মাস আগে মোট মৃত্যুর সাড়ে পাঁচ ভাগ খুলনায় হলেও গত এক মাসের ১৩ ভাগ মৃত্যুই হয়েছে বিভাগটিতে। অর্থাৎ দ্বিগুণেরও বেশি।
একইভাবে রাজশাহী ও রংপুরেও মৃত্যু বেড়েছে এবং সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহে মৃত্যুতে তেমন পরিবর্তন হয়নি।
এক মাসে করোনায় মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৬৮।
তাদের মধ্যে ঢাকায় ৫১০, চট্টগ্রামে ২০১, খুলনায় ১৪৮, রাজশাহীতে ১০৭, রংপুরে ৬৬, সিলেটে ৬২, বরিশালে ৫০ এবং ময়মনসিংহে ২৪ জন মারা গেছেন। শতকরা হিসেবে ঢাকায় প্রায় ৪৪, চট্টগ্রামে ১৭, খুলনায় ১৩, রাজশাহীতে ৯, রংপুরে ৬, সিলেটে ৫, বরিশালে ৪ ও ময়মনসিংহ ২ ভাগ মৃত্যু হয়েছে। আর দেশে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকায় শতকরা ৪৭ দশমিক ৮৩, চট্টগ্রামে ২৩ দশমিক ০১, খুলনায় ৭ দশমিক ৮৯, রাজশাহীতে ৬ দশমিক ৪৬, সিলেটে ৪ দশমিক ৭৪, রংপুরে ৪ দশমিক ০৩, বরিশালে ৩ দশমিক ৮৩ এবং ময়মনসিংহে ২ দশমিক ২১ ভাগ মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ শনিবার, ১৫ আগস্ট দেশে করোনা শনাক্তের ১৬১ তম দিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ৬৪৪ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ।
অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১২ হাজার ৮০০টি। আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৯১টি। এসব পরীক্ষায় নতুন করে ২ হাজার ৬৪৪ জনের মধ্যে কভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এদিন শনাক্তের হার ছিল ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন আরও ৩৪ এবং হাসপাতাল ও বাসা মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১২ জন।
অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে শনিবার পর্যন্ত সর্বমোট ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গড় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩ হাজার ৫৯১ এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৩ জন। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ ও সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২৪ ও নারী ১০ জন। সর্বোচ্চ ১৬ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। অন্য বিভাগগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৭ জন করে, সিলেটে ২ এবং রাজশাহী ও রংপুরে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ ও বাড়িতে ৩ জন। মৃতদের মধ্যে ৩১-৪০ বছরের ১, ৪১-৫০ বছরের ২, ৫১-৬০ বছরের ৯ এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সী ২২ জন।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৮৬৫ ও নারী ৭৬০ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৯ দশমিক ০৩ শতাংশ ও নারী ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর বিভাগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৮৩৪, খুলনায় ২৮৬, রাজশাহীতে ২৩৪, সিলেটে ১৭২, রংপুরে ১৪৬, বরিশালে ১৩৯ এবং ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ৮০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৭৩৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২০৯ জন। একই সময়ের মধ্যে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৯৫৪ জনকে। বর্তমানে সারা দেশে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫২ হাজার ৮৫১ জন। ২৪ ঘণ্টায় হটলাইনগুলোতে কল এসেছে ৫৩ হাজার ২০৬টি। এ সময় টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ হাজার ৯৩৭ জন। স্থল, সমুদ্র ও বিমানপথে ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রবেশ করেছেন ১ হাজার ৯৬২ জন, তাদের প্রত্যেককে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
এবি/রাতদিন