কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিককে সাজা দেওয়া ও ‘নির্যাতনের’ ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনসহ চার সরকারি কর্মকর্তাকে শাস্তির সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ডিসি সুলতানার দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি স্থগিতের সুপারিশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ হলেই শাস্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী আনীত ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তদন্ত ও শুনানি করে তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীনকে লঘুদণ্ড হিসেবে দুই বছর বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিনের ক্ষেত্রে পদাবনতির সুপারিশ করা হয়েছে। আর এনডিসি এস এম রাহাতুল ইসলাম তিন বছর বেতন বৃদ্ধির সুবিধা হারাবেন। সবচেয়ে কঠোর শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে সেই রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করা সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমার ক্ষেত্রে। তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার ঘটনার পরপরই তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীনকে জনপ্রশাসনে ন্যস্ত করা হয়েছিল। তাকে কোনো পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ঘটনার পর তখনকার আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। তার মূল পদ সিনিয়র সহকারী সচিব। পদাবনতি হলে তিনি সহকারী সচিব হবেন।
রাহাতুল ইসলাম এখন বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন। রিন্টু বিকাশ চাকমাও এখন কোনো দায়িত্বে নেই।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মার্চে কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর ডিসি সুলতানা নিজের নামানুসারে ওই পুকুরের নাম ‘সুলতানা সরোবর’ রাখতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক রাখার অভিযোগে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সুত্র: বাংলা নিউজ।
জেএম/রাতদিন