সীমান্তের ওপারে বাণিজ্যিকভাবে গাঁজা চাষ, বন্ধে ‘আগ্রহী নয়’ ভারতীয় পুলিশ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলা। প্রতিবেশি দেশটির ওই জেলার এপাশে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার বিস্তির্ণ এলাকা। এই দুই জেলার সীমান্তের ওপারেই কোচবিহার জেলাজুড়ে চলছে গাঁজা চাষ। অথচ দেশটির পুলিশ অবৈধ গাঁজা চাষ বন্ধে ‘আগ্রহী নয়’ বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

কলকাতার বাংলা দৈনিক বর্তমান এক খবরে জানিয়েছে, সেদেশে গাঁজা চাষ, মজুদ ও পাচার অপরাধ। কিন্তু তা বন্ধে ভারতীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেই।

কোচবিহারবাসী মনে করেন, পাচার বন্ধে যে তৎপরতা তার সিকিভাগও যদি গাঁজা চাষ বন্ধে পুলিশ নিত, তাহলে গাঁজার জোগানের অভাবে নেশা থেকে অনেকে মুক্তি পেত। গাঁজার জোগান থাকায় নেশাগ্রস্তদের সংখ্যা বাড়ছে। আর গাঁজা চাষে চাষিদের উৎসাহিত করতে মূলধন জোগাচ্ছে মাদক কারবারিরা। এই সুযোগে কোচবিহারে একরের পর একর জমিতে হচ্ছে এই নেশার চাষ।

অভিযোগ রয়েছে,  গাঁজা চাষ থেকে শুধু চাষি বা দালালরাই লাভবান হয় না। পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের পকেটে যায় গাঁজা চাষ থেকে প্রাপ্ত টাকার ভাগ। ফলে বছরের পর বছর ধরে কোচবিহারের মানসাই নদীর চর থেকে শুরু করে চান্দামারির মতো জনবহুল এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে এই চাষ।

কোচবিহার-১ ব্লকের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঘপালা, ডাঙাপাড়া, ভোটেরহাট, দেওয়ানবস, কুঠিবাড়ি, সুমসুমি, কশালডাঙায় গাঁজা চাষ হয়। চান্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজপুর, কাশিয়াবাড়ি, কাঁঠালবাড়ি, বৈরাতী, শোলমারি, রাখালমারিতেও চলে গাঁজার চাষ।  নিশিগঞ্জ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মানসাই নদীর চরেও গাঁজা চাষ হচ্ছে। ভাঐরথানা গ্রাম পঞ্চায়েতের মানসাই নদীর পূর্বদিকের চর, পূর্ব ভোগডাবরি, মাঘপাল-২, মাথাভাঙা-১ ব্লকের হাজরাহাট-১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়াপোঁতা, কলাগাঁও, বালাসিতে গাঁজা চাষ হচ্ছে।

অবৈধ জেনেও কেন গাঁজা চাষ?

স্থানীয় লোকজন বলছেন, গাঁজা চাষ করতে পুঁজির দরকার হয় না। দালালরা চাষের খরচের টাকার জোগান দেয়। ফসল উঠলে ওরাই বাজার দরে কিনে নেয়। এক বিঘা জমিতে সঠিকভাবে চাষ করতে পারলে লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়। এ কারণেই এই চাষের প্রতি আগ্রহী চাষিরা।

চাষিদের শনাক্ত করাও কঠিন

গাঁজাচাষিদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে পুলিশ প্রশাসনের। কারণ, চর এলাকা সহ শূন্য খতিয়ানের জমিতেই চাষ করা হয়। ওই সব জমির কোনও রেকর্ড নেই বলে চাষির কোনও খোঁজ পায় না পুলিশ। সাধারণত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে চাষিরা চারা তৈরি করে জমিতে লাগায়। জেলাজুড়ে ইতিমধ্যেই লাগানো গাঁজা ঘরে তোলার সময় শুরু হয়েছে। অথচ এখনও কোথাও অভিযান চালানো হয়নি।

মাথাভাঙার আতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি বলেন, কোথায় কত পরিমাণ গাঁজা চাষ হয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছি। খুব শীঘ্রই গাঁজা গাছ কেটে ফেলার অভিযান শুরু করা হবে।

এইচএ/রাতদিন