নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথমদিনে উপজেলার পঁচানালা খালের দুইপাশে গড়ে উঠা ১০/১২ টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ খালের দুইপাশের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সারাদেশে একযোগে নদ-নদী, খাল, জলায়শসহ অন্যান্য সরকারি জলাধার তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর পঁচানালা খালের দুই পাশের ৭৬ টি মধ্যে ১০/১২টি অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ করা হয়েছে। নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার মো. নাহিদ হাসান উচ্ছেদ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। নীলফামারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সৈয়দপুর পনি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, পচানালা খালটি প্রায় ২০০ বছর আগে জমিদার পচা সরকার খনন করেন। এলাকার সেচ সংকট ও বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জন্য মূলতঃ খালটি খনন করা হয়। পচানালা খালটি নীলফামারীর সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ন থেকে সৈয়দপুর শহর ঘেঁষে রংপুরের বদরগঞ্জ পর্যন্ত গিয়ে চিকলী নদীতে মিশেছে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিলোমিটার।
দীর্ঘদিন যাবৎ এটি সংস্কার ও সঠিক নজরদারির অভাবে এর পাড় দখল করে দিনের পর দিন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। তৈরী হয়েছে কাঁচা,আধাপাকা ও পাকা অবকাঠামো।
পাউবোর তালিকা অনুযায়ী পচানালা খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে সর্বমোট ৮৪টি। তন্মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলার অংশে ৭৬টি এবং রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার অংশে ৮টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এ সব অবৈধ স্থাপনা মালিকদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশও প্রদান করা হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার পর্যন্ত অবৈধ দখলদাররা তাদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি।
গতকাল উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনে শহরের উপকন্ঠে ‘পাতাকুঁড়ি’ নামের বিনোদন পাকের মালিক ঠিকাদার আলহাজ্ব মো. জয়নাল আবেদীন কর্তৃক পচানালা খালের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা পাকা সীমানা প্রাচীর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা ও দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সেই সাথে এই পার্কের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে দখলকৃত ৮ শতক খাসজমিও সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।
অভিযানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মির্জা মুরাদ হাসান বেগ সৈয়দপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারি প্রকৌশলী,শাখা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সৈয়দপুর থানা পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, নীলফামারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পচানালা খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। ওই তালিকায় থাকা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।