নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গুদাম ও ইয়ার্ডের লেবাররা। লেবারদের সর্দারের দায়িত্ব বন্টন নিয়ে যোগসাজশ, পুরাতন লেবারদের বাদ দিয়ে নতুন লেবার নিয়ে রেলওয়ে ওয়াগন থেকে মালামাল খালাসসহ নানা অনিয়ম, দূর্নীতি অভিযোগ আনা হয় এই সংবাদ সম্মেলনে।
শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর বেলা ১১টায় শহরের শেরে বাংলা সড়কের সৈয়দপুর প্লাজায় রেডচিলি হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাল গুদাম ও ইয়ার্ডে নতুন ও পুরাতন মিলে ৩৫/৪০ জন লেবার কর্মরত রয়েছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ইয়াসিন আলী লেবার সর্দারের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মৃত্যুর পর লেবার সর্দার হিসেবে ছিলেন ট্যান্ডেল ও মুন্সি মো. আনোয়ার হোসেন। তিনিও গত ৭/৮ মাস আগে মারা যান।
এ অবস্থায় বর্তমানে দায়িত্বরত ্যান্ডেল ও মুন্সি মো. কাইয়ুম গত ২৯ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার বরাবরে লেবার সর্দার হিসেবে স্থায়ীভাবে দায়িত্বের জন্য আবেদন করেন। তাঁর আবেদনপত্রে নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল এবং সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আখতার হোসেন বাদল সুপারিশ করেন। ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুমের সর্দার হিসেবে দায়িত্বের জন্য করা আবেদনটিও গ্রহন করেন সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলী।
তবে আবেদনপত্র গ্রহন করলে স্টেশন মাস্টার তার আবেদনপত্রটি রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা বরাবরে অদ্যাবধি পাঠাননি। উপরন্তু তিনি মৃত. সর্দার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আফতাব হোসেন ও মো. মোস্তাকের সঙ্গে যোগসাজশ করে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে লেবার সর্দার ও ট্যান্ডল হিসেবে তাদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তাঁদের করা আবেদনপত্রটি পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা বরাবরে পাঠিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শওকত আলী মালমালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাইরে লেবারদের দিয়ে আমাদনিকৃত পাথর ওয়াগন থেকে খালাস করতে কাজ করাচ্ছেন। তিনি আমদানিকারকদের কাছ থেকে মালামাল খালাসে বেশি পরিমানে অর্থ আদায় করলেও লেবারদের স্বল্প পরিমাণে মজুরী পরিশোধ করা হচ্ছে।
পুরাতন লেবাররা এই অবৈধ কাজে বাঁধা দিলে তাদের নামে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেন স্টেশন মাস্টার শওকত আলী। এদিকে, স্টেশন মাল গুদাম ও ইয়ার্ডের লেবারদের বাদ দিয়ে বাইরের লেবারদের নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনের ইয়ার্ডে ওয়াগন থেকে মালামাল খালাস করার কারণে পুরাতন লেবাররা বিপাকে পড়েছেন। তারা বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারিতে কাজের অভাবে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার মো শওকত আলী জানান, ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুম সর্দারের দায়িত্বের জন্য আমার বরাবরে আবেদন দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তিনি আর আমার সঙ্গে কোন রকম যোগাযোগ করেননি। আর বাইরে লেবারদের নিয়ে ওয়াগণের মালামাল খালাস প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সময়ে পুরাতন লেবাররা প্রতি ওয়াগন পাথর খালাস করতে ৭ হাজার টাকা দাবি করেন। তারপরও আমি তাদের বলেছি উভয়ে মিলেমিশে কাজ করো।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে মালগুদাম ও ইয়ার্ডের লেবার মো. শাহিদ, মো.কছির উদ্দিন, মো. মরাদ, তৌহিদ লাড্ডান, মো. আজিজুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান ও মো. বাবলু প্রমূখ উপাস্থত ছিলেন।
জেএম/রাতদিন