ট্রাক চালক বাহাতিন বছরের ছুটিতে বাড়ি আসেন । ট্রাকটি রেখে দেন বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গায়। সেই ট্রাকের ইঞ্জিনেই বাসা বাঁধে এক মা পাখি। সেখানে ডিমও পাড়ে। আর তা দেখে দেড়মাস ট্রাক চালু করলেন না চালক ।
ট্রাক চালিয়ে যার সংসার চলে। এ দৃশ্য দেখে চালক বাহাতিন পারলেন না ট্রাকটি চালু করতে। পরিবারের অন্যদের সহমতে যতদিন ডিম ফুটে বাচ্চা হয়নি,ততদিন তিনি ট্রাক চালানো বন্ধ রাখেন । যদিও ট্রাক চালানোর রোজগার থেকে চলে তাদের সংসার ।
এই ঘটনাটি ঘটেছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছেই একটি ছোট্ট শহরে । সেখানেই ট্রাক চালক বাহাতিন গুরসির বাড়ি।
একটি অনলাইন খবরে জানা যায়, ট্রাক চালিয়ে সংসার চলে বাহাতিনের। বড় বড় শহরগুলিতে মাল পরিবহনের কাজ করেন তিনি । এ বছর ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরেন বাহাতিন। বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় রেখে দেন তার ট্রাক । তখনই ট্রাকের ইঞ্জিনে বাসা বাঁধে একটি ছোট্ট মা পাখি। সেই বাসায় পাড়ে ডিমও। পুরো বিষয়টাই অজানা ছিল ট্রাকচালক বাহাতিনের ।
ছুটি শেষে ট্রাক নিয়ে বের হতে গিয়েই তিনি লক্ষ্য করেন ট্রাকের ইঞ্জিনে আস্ত একটি পাখির বাসা। আর সেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি ডিম । ট্রাক চালু করলেই ইঞ্জিনের ঝাঁকুনিতে ভেঙে যাবে বাসা। আর নষ্ট হবে ডিমগুলো । তা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না বাহাতিন ও তার পরিবারের অন্যান্যরা ।
মা পাখিটির মমতায় জড়িয়ে পড়েন বাহাতিন পরিবার। তারা সিদ্ধান্ত নেন, যত দিন না ডিম ফুটে বাচ্চাগুলি বড় হয়ে উড়ে যাবে না, ততদিন ট্রাক চালাবেন না।
একসময়ে ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। এরপর বাচ্চাগুলি উড়তে শিখলে তাদের নিয়ে বাসা ছেড়ে উড়ে যায় মা পাখি। এজন্য প্রায় ৪৫ দিন ট্রাক না চলায় আয় বন্ধ ছিল বাহাতিনের। এছাড়া এসময় ফিরিয়ে দিয়েছেন মোটা টাকার ভাড়ার বায়নাও। এতে বাহাতিন-পরিবারের সংসার চালাতে কষ্ট হলেও তাদের মনে তৃপ্তি ছিল । ছোট্ট পাখির বাচ্চাগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দিতে পেরে তারা খুশি ছিল অনেক অনেক ।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে বাহাতিনের এই মানবিকতার কাহিনী প্রকাশ্যে আসে । আর, প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন বাহতিন-পরিবার