না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কথা সাহিত্যিক রিজিয়া রহমান (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি ক্যানসার ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা নারী ঔপন্যাসিক রিজিয়া রহমান ১৯৩৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি কলকাতার কাশিপুর থানার নওবাদ গ্রামে। তাঁর পারিবারিক নাম ছিল জোনাকী। তাঁর বাবা আবুল খায়ের মোহম্মদ সিদ্দিক ছিলেন একজন চিকিৎসক। মা মরিয়াম বেগম ছিলেন গৃহিণী। তাঁদের পরিবার ছিল সংস্কৃতিমনা।
১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর তাঁরা বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে রিজিয়া রহমানের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় ফরিদপুরে। সেই সময় শখের বশে কবিতা লিখতেন। ১৯৫০ সালে তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়েন, তখন তাঁর লেখা গল্প ‘টারজান’ সত্যযুগ পত্রিকায় ছোটদের পাতায় ছাপা হয়। ১৯৫২ সালে বাবার মৃত্যুর পর তাঁরা ঢাকার শাইনপুকুরে নানাবাড়িতে চলে আসেন তিনি।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অগ্নিসাক্ষরা, ঘর ভাঙা ঘর, রক্তের অক্ষর, বং থেকে বাংলা, অলিখিত উপাখ্যান, সূর্য-সবুজ-রক্ত, অরণ্যের কাছে, উত্তর পুরুষ, শিলায় শিলায় আগুন, হে মানব মানবী, নদী নিরবধি, পবিত্র নারীরা এবং সীতা পাহাড়ে আগুন, প্রজাপতি নিবন্ধন।
‘অভিবাসী আমি’ তাঁর আত্মজীবনীমূলক প্রথম বই। এতে তিনি ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তাঁর শৈশবের বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর দ্বিতীয় আত্মজীবনীমূলক বই ‘নদী নিরবধি’ ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়। এতে তিনি তাঁর শৈশবের পাশাপাশি লেখকজীবনের বর্ণনা দিয়েছেন।
লেখালেখির স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক প্রদান করে।
পারিবারিক জীবনে রিজিয়া রহমান মো. মীজানুর রহমানের সহধর্মিণী। মীজানুর রহমান ছিলেন একজন খনিজ ভূতত্ত্ববিদ।