নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানীরা মানব শরীরে একটি নতুন অঙ্গের সন্ধান পেয়েছেন। প্রস্টেট ক্যানসারের বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ওই অঙ্গ খুঁজে পান তারা। গলার উপরের দিকে থাকা আণুবীক্ষণিক এক ধরনের লালাগ্রন্থির অস্তিত্ব আবিস্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভসায়েন্স এবং রেডিওথেরাপি অ্যান্ড অঙ্কোলজি এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নেদারল্যান্ডস ক্যানসার ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা পরিচালনা করেন।
ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গলার উপরের দিকে হাজার হাজার আণুবীক্ষণিক লালা গ্রন্থি দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যার নাম ‘টিউবারিয়াল লালা গ্রন্থি’ রাখা হয়েছে।
অন্তত ১০০ রোগীর শরীরে পরীক্ষা চালিয়ে ওই লালা গ্রন্থির উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। এই আবিষ্কার ক্যানসারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই গ্রন্থিগুলোর আকার প্রায় দেড় ইঞ্চি বা ৩.৯ সেন্টিমিটার।
গবেষকরা জানান, ওই গ্রন্থিগুলো সম্ভবত নাক ও মুখের পিছনের দিকে অবস্থিত গলার উপরের অংশকে সিক্ত ও আর্দ্র করে রাখে।
ওই ক্যানসার ইনস্টিটিউটের রেডিয়েশন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ওউটার ভোগেল, তিনি এই গবেষণার অন্যতম একজন গবেষক। এ বিষয়ে তিনি জানান, সম্ভবত হাজার হাজার লালাগ্রন্থি ছড়িয়ে রয়েছে গলা এবং মুখের মিউকোসাল টিস্যুতে। তাহলে ভেবে দেখুন এটা আবিষ্কার করার পর আমরা কতটা চমকে গিয়েছিলাম।
এতোদিন মানব শরীরে তিনটি বড় লালাগ্রন্থির উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এর মধ্যে একটি গলার নিচে এবং বাকি দু’টির একটি চোয়ালের নিচে ও অন্যটি চোয়ালের পিছন দিকে অবস্থিত। কিন্তু নতুন এই গবেষণা সেখানে আরো গ্রন্থি থাকার চিত্র তুলে ধরলো।
এতদিন যেহেতু ওই আণুবীক্ষণিক লালা গ্রন্থিগুলো সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানতো না। তাই সেগুলোকে রেডিয়েশনের কবল থেকে বাঁচাতেও পারতো না। ফলে রোগীর শরীরে আরো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেত।
এই গবেষণার ফলে, আগামী দিনে বিজ্ঞানীরা এই লালা গ্রন্থিগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকলে রেডিয়েশনের সময় রোগীদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরআই/ রাতদিন