পাহাড়সম রান গড়া হলো না অস্ট্রেলিয়ার। রীতিমতো রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন। তবে শেষদিকে সেটা অব্যাহত রাখতে পারেননি তারা।
ফলে দলীয় স্কোর বোর্ডে যতটা রান ওঠার কথা, ততটা উঠলো না। আমির, হাসান, রিয়াজ, আফ্রিদিদের দুরন্ত বোলিংয়ে ৩০৭ রানে গুটিয়ে গেলো অজিরা।
বুধবার, ১২ জুন টনটনে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। যদিও এখনো বৃষ্টি নামেনি। তবে শুরুতে পেসাররা তার সিদ্ধান্তকে স্বার্থক করতে পারেননি। তাদের ব্যর্থ করে অস্ট্রেলিয়াকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। অবিচ্ছিন্ন ওপেনিং জুটিতে ১৪৬ রান তোলেন তারা।
ফিফটি তুলে সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন ফিঞ্চ। তবে তাতে বাঁধ হয়ে দাঁড়ান মোহাম্মদ আমির। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই অজি অধিনায়ককে ফেরান তিনি। ফেরার আগে ৮৪ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ।
তিনি ফেরার পর ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি স্টিভ স্মিথ। মোহাম্মদ হাফিজের বলে আসিফ আলিকে ক্যাচ তুলে দেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা এ ব্যাটসম্যান। তবে স্বরূপে ছিলেন ওয়ার্নার। নির্বাসন কাটিয়ে ফিরে ফর্মের মগডালে আছেন তিনি। বিশ্বকাপের আগে মাতিয়ে এসেছেন আইপিএল। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেও সেই ফর্ম ধরে রেখেছেন বিধ্বংসী ওপেনার। পথিমধ্যে আসরে তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন তিনি। দোর্দণ্ড প্রতাপে এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। এরই মাঝে শাহীন আফ্রিদির বলে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
তবে পথচ্যুত হননি ওয়ার্নার। শাহীন আফ্রিদিকে বাউন্ডারি মেরে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। তুলে নেন অনবদ্য সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বিস্ফোরক ওপেনারের ১৫তম তিন অংক ছোঁয়া ইনিংস।
অবশ্য কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য স্পর্শ করার জন্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ওয়ার্নার। ব্যক্তিগত স্কোরে আর ৭ রান করেই আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ওয়ার্নার। ফেরার আগে ১১১ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১০৭ রানের ঝলমলে ইনিংসটি সাজান তিনি। ততক্ষণে বিশাল সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে যতটা ভাবা হয়েছিল শেষ অবধি তা হয়নি। সেটা হতে দেননি মূলত আমির। দীর্ঘদিন অফফর্মে থাকলেও বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে আছেন তিনি। ব্যাটিং স্বর্গে স্বরূপে ছিলেন তিনি। ওয়ার্নার ফেরার পর নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে ফেরান উসমান খাজাকে। ওয়াহাব রিয়াজের তালুবন্দি করে তাকে ফেরান বাঁহাতি পেসার। সেই রেশ না কাটতেই শোয়েব মালিকের ক্যাচ বানিয়ে শন মার্শকে ফেরান তিনি।
এরপরই পথ হারায় অস্ট্রেলিয়া। কেউই দাঁড়াতে পারেননি। কোল্টার নাইলকে তুলে নিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের চেপে ধরেন রিয়াজ। তাতে প্যাট কামিন্সকে ফিরিয়ে তাতে সমর্থন জোগান হাসান। পরে আমির তোপ চলতেই থাকে। অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ককে ফিরিয়ে ৪৯ ওভারেই প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেন তিনি।
সব মিলিয়ে এ ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করেন আমির। এ নিয়ে বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বনে গেছেন তিনি। ১০ উইকেট নিয়ে সবার ওপর এ গতিতারকা। ৮ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন নিউজিল্যান্ডের লোকি ফার্গুসন। আর ৬ উইকেট নিয়ে তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক।
এনএইচ/ রাতদিন