এবার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আরেক মুক্তিযোদ্ধা। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি পরিবারকে রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়াই দাফনের নির্দেশ দিয়েছেন অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার কাটালী মীরপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন ঘুষ দিতে না পারায় ছেলের চাকরি হয়নি। সেই ক্ষোভে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেন এবং এর অনুলিপি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠান।
চিঠিতে তিনি জানান, সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলার ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি-কাম-নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তার ছেলে সাহিবুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দাড়খোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবেদন করেন এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু এতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মেনে নিয়োগ কমিটি আরেক প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়।
এ ঘটনায় সাহিবুল নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। এটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহল মামলা প্রত্যাহার করে নিতে সাহিবুল ও তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা সলিমুদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে দাবি করে এ অনিয়মের বিচার না হলে সলিমুদ্দিন তার মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে নিষেধ করেছেন।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমুদ্দিন বলেন, ‘আমি দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা। ছেলের চাকরির জন্য ঘুষ দিতে পারিনি বলে ওরা আমার ছেলেকে চাকরি দিল না। এ সব ঘটনার বিচার না হলে মৃত্যুর পর আমি এমন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের দ্বারা রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমি এখনও এরকম কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগের কাগজ পেলে আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয় দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের যোগীবাড়ী গ্রামের অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনকে। অন্যায়ভাবে ছেলে নুর ইসলামকে চাকরিচ্যুত ও বাস্তুচ্যুত করার ক্ষোভে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করার কথা পরিবারকে বলে যান।
জেএম/রাতদিন