এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত, চিকিৎসা ব্যয় দিচ্ছে সরকার

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। তিনি এখনো অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন। রোববার, ৩০ জুন দিবাগত রাত তিনটা পর্যন্ত প্রাপ্ত সর্বশেষ খবরে জানা গেছে এ তথ্য।

রোববার মধ্যরাতে এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এরশাদের ভাই জিএম কাদেরও একই তথ্য জানিয়েছেন।

দেশের প্রথমসারির কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে এসব তথ্য। অথচ রোববার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরশাদের ‘মৃত্যুর গুজব’ ছড়িয়ে পড়ে। অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তিসহ কোনো কোনো ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং অখ্যাত অনলাইন পোর্টালে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ করেছে।

রোববার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনেটে প্রকাশিত সর্বশেষ খবরে যুগান্তর অনলাইন জানায়, এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। তিনি এখনো অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন। তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেয়ার দরকার হয়নি।’

এর আগে রোববার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ছোট ভাই জিএম কাদের বলেন, তার ফুসফুসে পানি চলে এসেছে, ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে। তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।

রোববার রাত সাড়ে ১০টায় জিএম কাদেরের সাথে কথা বলে জাগোনিউজ। সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, ‘এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত, তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন।’

এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীকে উদ্ধৃত করে একই তথ্য জানায় বাংলানিউজ

তবে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রকাশিত সারাবাংলাডটনেট এক খবরে ‘এরশাদ সংকটাপ্ন’ বলে দাবি করেছে। জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁকে উদ্ধৃত করে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। রাতে রাঙ্গাঁ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি তার অবস্থা সংকটাপন্ন। যে কোনো সময় তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হতে পারে।’

খবরে বলা হয়, এরশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে হাসপাতালে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন তার পরিবারের সদস্য এবং জাপার নেতাকর্মীরা। এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মেজর (অব.) মান্নানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা সিএমএইচএ উপস্থিত হয়েছেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সিএমএইচ-এর ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাইরে থেকে তার সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। এরশাদের শারীরিক অবস্থা হঠাৎ করে অবনতি হওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। রোববার, ৩০ জুন বিকেল ৫টার দিকে তাঁর  শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।

রোববার বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদের বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চিকিৎসার সব ব্যয় সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হচ্ছে’। এ খবর দিয়েছে এনটিভি অনলাইন

এরশাদের রোগমুক্তি ও সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি।

২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ। ভোটের মাত্র তিন দিন আগে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরলেও নির্বাচনী প্রচারে যোগ দেননি। ২০ জানুয়ারি ফের সিঙ্গাপুরে যান চিকিৎসার জন্য। সেখান থেকে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি।

এইচএ/রাতদিন