চীনের সাধারণ মানুষরাই নন, নোভেল করোনাভাইরাসের থাবায় সংক্রমিত হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। এই প্রথম সরকারি ভাবে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা জানাল চীন। এতে বলা হয় করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ চিকিৎসকের আর আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ১৭১৬।
শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশটির ন্যাশনাল হেল্থ কমিশন এই তথ্য জানায়।
এই পরিসংখ্যান সামনে আসার পরেই ভয়ঙ্কর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে চীনের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মহলে। আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ বেড়েছে শি চিনফিং প্রশাসনেরও।
শুক্রবারও চিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের। যার মধ্যে ১১৬ জনই ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশের। সব মিলিয়ে মারণ ভাইরাসের থাবায় শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ১৩৮০। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৮২৩ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ হাজার ৯৮৬।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানিয়েছে, এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ভাইরাসের প্রকোপ। সব মিলিয়ে চিনের সঙ্গে গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ বাড়ছে।
কিন্তু তার চেয়েও সঙ্কট তৈরি হয়েছে চিনের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। যে হুবেই প্রদেশে ভাইরাসের থাবা সবচেয়ে বেশি, সেখানে দিন-রাত এক করে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা। মুখোশ, গ্লাভস, পোশাক ও নিরাপদ চশমার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা এক বার খাচ্ছেন। কারণ হাসপাতালে বার বার পোশাক, গ্লাভস, মুখোশ খুলে খাওয়া দাওয়ার সময় সংক্রমণ হতে পারে।
তার মধ্যেই শুক্রবার চিনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর জেং ইক্সিন বলেন, ‘আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ১১০২ জনই হুবেই প্রদেশের। মোট আক্রান্তের ৩.৮ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী। মৃত্যুর হার ০.৪ শতাংশ। তবে তাঁদের সংক্রমণ হাসপাতাল থেকে নাকি সাধারণ ভাবেই হয়েছে, তা এখনও তদন্ত ও গবেষণার বিষয়।’
এই পরিসংখ্যানের পর অনেকেরই আশঙ্কা, এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীরা যে উদ্যম নিয়ে কাজ করছিলেন, তাতে কিছুটা হলেও ভাটা পড়তে পারে। তার জেরে ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজির অধ্যাপক বেঞ্জামিন কাউলিং বলেন, ‘‘আমি মনে করি এটা অত্যন্ত উদ্বেগের। উহানে এক একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে অনেক রোগীর দেখভাল করতে হচ্ছে। সেই চিকিৎসা করতে গিয়ে আক্রান্ত হলে সেটা খুবই ভয়ঙ্কর।’’