গাভি জন্ম দেবে যমজ বাছুর

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন একটি গাভী থেকে বছরে একটির বদলে দুটি বাছুর জন্ম দেয়ার প্রযুক্তিতে তাঁরা সাফল্য পাওয়ার দাবি করছেন ।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব গণমাধ্যমকে বলেন,”বাংলাদেশে এ প্রযুক্তিটি নতুন। প্রাথমিক সাফল্যের পর আমরা এটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। সফল হলে এটি নিঃসন্দেহে দেশের গরু সম্পদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে”।

প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব বলছেন, বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে যে দেশে গরুর সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। গবাদিপশুর বৈশ্বিক সুচকে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ এমন খবর এসেছিলো গত বছরের শুরুতেই। তবে গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল-সব মিলিয়ে গবাদিপশু উৎপাদন বাংলাদেশ তখন বিশ্বে বারোতম অবস্থানে ছিলো।

এখন বিজ্ঞানীরা আশা করছেন বাংলাদেশে ভালো মানের গাভীর দুটি করে বাচ্চার প্রকল্প মাঠপর্যায়ে সফল হলে সেটি গবাদিপশু এবং এর মাধ্যমে গণমানুষের জীবনমানের আরও উন্নতি করা সম্ভব হবে।

গবেষকরা বলছেন, এই প্রযুক্তিতে বেশি দুধ দেয়, এমন গাভি থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে নেওয়া হয়। সেখানে ডিম্বাণুকে পরিপক্ব করে ফার্টিলাইজ করানো হয়। এর ফলে যে ভ্রূণের জন্ম হয়, গবেষণাগারে সেখান থেকে দুটি করে ভ্রূণ ধাত্রী গাভিতে সংস্থাপন করা হয়।

ড. গৌতম কুমার দেব জানান, ‘প্রাথমিকভাবে সফল হওয়ায় আমরা এখন ভালো মানের এনিম্যাল বাছাই করছি এবং এসব লাইভ এনিম্যাল থেকে ডিম্বাণু কালেকশনের কাজ করা হবে। আমরা আশা করছি, মাঠপর্যায়ে এটি সফল হবে এবং পরে তা আমরা ছড়িয়ে দিতে পারব। একটি সুস্থ ও ভালো মানের গাভির ডিম্বাণু দিয়ে অনেকগুলো গাভির গর্ভধারণ করানো সম্ভব হবে।’

তবে বাংলাদেশে গবাদি পশুর কৃত্রিম প্রজনন নতুন কিছু নয় এবং এসব কাজে সহায়তার জন্য দেশের প্রতি উপজেলায় একজন করে পশু চিকিৎসক আছেন। কিন্তু এই পদ্ধতিতে একটি গাভি থেকে একটি বাছুরই পাওয়া সম্ভব হয়। মূলত জোড়া বাছুর চিন্তাটির গবেষণাগারে সফলতা আসতে থাকে কয়েক বছর আগে। প্রায় চার বছর ধরে পরীক্ষার আওতায় ধারাবাহিকভাবে একটি গাভি থেকে জোড়া বাছুর জন্ম নেওয়ার পর এখন এটি মাঠপর্যায়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষকরা। সূত্র : বিবিসি।

এমএস/রাতদিন