দেশের ৪৮তম ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের চলতি মেয়াদের প্রথম বাজেট।
এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ । সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ ।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রথমবারের মতো দেয়া এ বাজেটে ভ্যাটের পরিধি যেমন ব্যাপক হারে বিস্তৃত করা হয়েছে । তেমনি নিত্য ব্যবহার্য কিছু পণ্যের ভ্যাট হারও বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে সব ধরনের সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গুলের দাম বাড়তে পারে। একই কারণে বাড়তে পারে মোবাইল ফোনে কথা বলার খরচ। রড উৎপাদন ও বিপণনে ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করায় বাড়ি করার খরচ বাড়তে পারে।
একই কারণে দাম বাড়তে পারে প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থালি সামগ্রী, সিআর কয়েল, জিআই ওয়্যার, তারকাঁটা, স্ক্রু, অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসনসহ গৃহস্থালি সামগ্রী, ব্লেড, ট্রান্সফরমার, সানগ্লাস, রিডিং গ্লাসের।
উৎপাদন পর্যায়ে ট্যারিফ মূল্যের পরিবর্তে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করায় এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, গুঁড়া মসলা, টমেটো কেচাপ, চাটনি, ফলের জুস, টয়লেট টিস্যু, টিউবলাইট, চশমার ফ্রেমের দাম বাড়তে পারে।
স্বর্ণ ও রুপার জুয়েলারি, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, লঞ্চের এসি কেবিন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ইনডেনটিং, আসবাবপত্র, পরিবহন ঠিকাদার, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর ভ্যাট দেয়ার প্রস্তাব করায় এসব ক্ষেত্রে গ্রাহকদের খরচ বাড়তে পারে।
পোশাকের মূল্যের ওপর আড়াই শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে জামা-কাপড়ের দাম বাড়তে পারে। জামা-কাপড় কেনার পাশাপাশি তৈরি করতেও খরচ বাড়তে পারে। কারণ জামা-কাপড় তৈরির ওপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে।
যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, অ্যাম্বুলেন্স ও স্কুলবাস ছাড়া সব ধরনের পরিবহন রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট নবায়ন, ফিটনেস সনদ, মালিকানা সনদ নিতে এবং নবায়ন করতে বিআরটিএ নির্ধারিত সেবামূল্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক আরোপের কারণে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়তে পারে। সুগার ও রিফাইন সুগারের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়ছে, যা আগে ছিল ২০ শতাংশ। ফলে চিনির দামও বাড়তে পারে।
হেলিকপ্টারের সেবা মূল্যের ওপর ভ্যাটের পাশাপাশি সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। ফলে হেলিকপ্টারে যাতায়াতের ক্ষেত্রে খরচ বাড়তে পারে।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি ।
বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
বরাবরের মতো বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে, অর্থমন্ত্রীর অসুস্থ্যতার কারণে বাজেটের বাকী অংশ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থাপন করেন ।
নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে ৩০জুন ।
এসকে/রাতদিননিউজ