বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কে প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন সে বিষয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
রোববার, ২১ জুলাই নিজ ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি তার নিজে দৃষ্টিভংগি তুলে ধরেন।
ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘গত নির্বাচনের পর আমি একটু বিরতি নেই, তাই এই পেজেও কম পোস্ট করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার কিছু বলা উচিত বলে মনে হলো।
আপনারা হয়তো দেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার ভয়ংকর ও মিথ্যা দাবি। উনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে নাকি ৩ কোটি ৭০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ‘গায়েব’ বা ‘গুম’ হয়ে গেছেন। প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি যে সংখ্যাটি উনি বলছেন তা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার ১০ গুণেরও বেশি, আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যার কাছাকাছি। এত মানুষ গুম হলো সবার অজান্তে? ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ গায়েব হলো কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই?
[মুল ফেসবুক পোষ্টটি দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন]
প্রিয়া সাহাকে আমেরিকায় পাঠানো হয় বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মনোনয়নে। অনেক সমালোচনার পর আজ তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন তারা অংশগ্রহণকারীদের কথাবার্তার ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেন না। কিন্তু যখন তাদের একজন মনোনীত অংশগ্রহণকারী তাদেরই রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে কোনো ভয়ংকর মিথ্যা বক্তব্য দিলেন, তাদের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রতিবাদ জানানো, যা তারা করেননি।
এই বিষয়টি থেকে কিন্তু মার্কিন দূতাবাসেরই দুরভিসন্ধি প্রকাশ পায়। তারা জেনেশুনেই প্রিয়া সাহাকে বাছাই করে কারণ তারা জানতো উনি এই ধরনের ভয়ংকর মিথ্যা মন্তব্য করবেন। এই ধরনের কাজের পিছে একটাই কারণ চিন্তা করা যায়: মানবিকতার দোহাই দিয়ে আমাদের এই অঞ্চলে সেনা অভিযানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। মনে রাখা ভালো কয়েকদিন আগেই মার্কিন এক কংগ্রেসম্যান একটি বক্তব্যে বলেছিলেন বাংলাদেশের মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল করা উচিত।
মার্কিন দূতাবাস যে আওয়ামী লীগ বিরোধী তা নতুন কিছু নয়। তাদের সকল অনুষ্ঠানেই জামায়াত নেতাকর্মীরা ও যুদ্ধাপরাধীরা নিয়মিত আমন্ত্রিত হতেন। প্রিয়া সাহার মিথ্যা বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তাদের সরাসরি আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র পরিষ্কারভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সৌভাগ্যবশত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সরকার অন্যান্য দেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন। তারা এই ধরনের ভয়ংকর মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করার মতোন বোকাও নন।’
জেএম/রাতদিন