এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করেও কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চতায় পড়েছিল শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী সুপন রায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর কলেজে ভর্তির অনিশ্চতায় দূর হয়েছে। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ওব্যাট হেল্পার্সের আর্থিক সহায়তা সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী সুপর রায়।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর বাড়াইশালপাড়া গ্রামের নয়াপাড়ার বাসিন্দা শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের তিন ছেলের মধ্যে ছোট সুপন রায়। শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী সুপন। জন্মের পরপরই তাঁর ডান হালের আঙ্গুলে পুড়ে যায়। বাম হাতের অক্ষত দুই আঙ্গুল দিয়ে কোন রকমে লেখতে পারে সে।
এভাবেই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে চলতি ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ -৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী সুপন রায়।
তাঁর বাবা পেশায় একজন দিনমজুর। তাঁর দৈনন্দিন আয়েই চলে পাঁচ সদস্যের পরিবারটি। তাঁর ওপর আমার সুপনরা তিন ভাই লেখাপড়া করেন। অভাবের সংসারে বেড়ে উঠা সুপন রায় সৈয়দপুর লক্ষনপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ- ৫।
এসএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেও কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চতায় পড়ে সে। কারণ তাঁর গরীব বাবার পক্ষে তাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে পড়াশোনা করানো অসম্ভব। এ অবস্থায় অনলাইন ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিক্ষানগরী সৈয়দপুরের ট্যালেন্ট শো অনুষ্ঠানে এসে তাঁর কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা ও অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছিল সুপন। আর এ বিষয়টি বেসরকারি সংস্থা ওব্যাট হেল্পার্সের দৃষ্টিতে আনেন শিক্ষানগরী সৈয়দপুরের প্রতিনিধিরা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাছাই বাছাই শেষে শিক্ষার্থী সুপন রায়কে কলেজে ভর্তির জন্য এককালীন ৭ হাজার ৪ শ’ টাকা প্রদান করা হয়। গত মঙ্গলবার ওব্যাট হেল্পার্স সৈয়দপুর শাখার বৃত্তির তহবিল থেকে দেয়া ওই টাকায় সুপন সৈয়দপুরের লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওব্যাট হেল্পার্স সৈয়দপুর শাখার প্রজেক্ট অফিসার মাহাফুজ আলম।
ওব্যাট হেল্পার্সের সৈয়দপুরের প্রজেক্ট অফিসার মাহাফুজ আলম জানান, ‘আমরা সব সময় ওব্যাট হেল্পার্সের মাধ্যমে শিক্ষা, সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকি। আর তারই ফলশ্রুতিতে মেধাবী সুপন রায়কে কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও সুপনের মতো অদম্য শিক্ষার্থীদের পথচলায় পাশে থাকবে ওব্যাট হেল্পার্স।’
কলেজে ভর্তি হয়ে সুপন জানান, এতোদিন কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মধ্যে পড়েছিলাম। আজ আমার সেই দুশ্চিন্তাটা অনেকটাই দূর হলো। আমাকে কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ওব্যাট হেল্পার্সের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে চান সুপন। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরিবার সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অদম্য সুপন।
জেএম/রাতদিন