কমেছে তিস্তার পানি, ভেসে গেছে হাজারো পরিবারের স্বপ্ন

তিস্তায় পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় রেড এলার্ট জারি হওয়ার পর অবশেষে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমলেও সর্বগ্রাসী তিস্তার ছোবলে হাজারও পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।

জেলার ৫টি উপজেলায় পানি কমে যাওয়ার কারণে তীব্র ভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলী ক্ষেত ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ী ভেঙে বিলীন হয়েছে নদীতে। আবার দীর্ঘদিন বসতভিটা তলিয়ে থাকায় এখনো ঘরে ফিরতে পারছে না অনেকেই।

সোমবার, ১৩ জুলাই সন্ধ্যায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের (৫২ মিটার ৬০ সেঃমিঃ) সমান।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। পরদিন সকালে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা্রর অতিক্রম করে পানি প্রবাহ। ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বামতীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

ডুবে যায় কৃষকের ফসল। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। পরপর তিনদিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সোমবার দুপুর থেকে পুনরায় কমতে শুরু তিস্তার পানি। 

তিস্তার দুই তীরে নদীভাঙনে শত শত হেক্টর জমির বাদাম, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত হয় নদীতে বিলীন হয়েছে অথবা বণ্যার জলে ভেসে আসা বালিতে চাপা পড়েছে।

অন্যদিকে ঠিক যেখান দিয়ে তিস্তা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সেই দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে তিস্তা। ভারত থেকে আসা নদীটি ওই এলাকা দিয়েই দেশে প্রবেশ করেছে, ফলে তিস্তার পানির প্রথম ধাক্কা সহ্য করতে হয় দহগ্রামকে। তবে সেখানে রবিবার যেন তাণ্ডব চালিয়েছে তিস্তার ঢল। রবিবার (১২ জুলাই) বিকেলে বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দহগ্রাম ইউনিয়নের ১, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা চরাঞ্চলসহ সর্দারপাড়া, মুন্সিপাড়া, ক্লিনিক পাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া এলাকায় বন্যা চরম আকার ধারণ করেছে। অবশ্য সোমবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী, তিস্তার বামতীরে বাধ না হওয়ায় নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

তিস্তা ব্যারাজের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, এখন বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি প্রবাহ। বন্যা পরিস্থিতির আপাতত উন্নতি ঘটেছে।

এনএ/রাতদিন