‘নাগরিক কোলাহল’ ছেড়ে গেলেন জাসদের কনক

‘চললাম….
নাগরিক কোলাহল থেকে বহু দূরে 
ডুয়ার্সের পাহাড় আর জংগলে…’।

হ্যাঁ, প্রতিবেশি দেশটির জলপাইগুড়ি জেলার ওই সাফারি পার্কে গিয়েছিলেনও তিনি।

দেশ থেকে রওয়ানা হওয়ার আগে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে ওই স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন। গত ২০ জানুয়ারি সকাল ৮টা পাঁচ মিনিটে।

২১ জানুয়ারি দুপুর ২টা তিন মিনিটে তাঁর স্ট্যাটাস, ‘অশান্ত মন শান্ত হয় যেথায়, শান্তিনিকেতন আশ্রমের পথে…’।

একই দিন রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘খোয়াই বনের অন্য হাটসহ শান্তিনিকেতনে ঘুরাঘুরি’।

পরদিন বিকাল ৪টা ৪১ মিনিটে তাঁর স্ট্যাটাস ছিল, ‘ এবারের মত বিদায় শান্তিনিকেতন। আবার আসিবো ফিরে এই বাংলায়.. ’

ট্রেনের কেবিনে নিজের শুয়ে থাকাসহ কয়েকটি ছবি দিয়ে ২৩ জানুয়ারি ভোর তিনটা ৪৩ মিনিটে তিনি টাইমলাইনে লিখেন ‘ডুয়ার্সের জংগলের পথে যাত্রা…’।

এরপর থেকে নিজের টাইমলাইনে তাঁকে আর সক্রিয় পাওয়া যায়নি।

কারণ তিনি আর নেই। ডুয়ার্সের ওই জঙ্গলেই হাতির আক্রমনে প্রাণ হারান তিনি। বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় ঘটেছে এ ঘটনা।

তাঁর নাম সাইমুন কনক। তিনি মুজিব বাহিনীর কমান্ডার নূরে আলম জিকু’র ছেলে।

পেশায় ব্যবসায়ী কনক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। একসপ্তাহ আগে স্ত্রী ও বন্ধুদের সঙ্গে ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, শুক্রবার বিকেলে একটি গাড়িতে কয়েকজন পর্যটক মূর্তি থেকে খুনিয়ার জঙ্গলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল বুনো হাতি। তা দেখে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারেননি কনক।

গাড়ি থেকে নেমে হাতির ছবি তুলতে থাকেন। তবে এসময় আচমকাই আক্রমণ করে বুনো হাতিটি। চোখের পলকেই কনককে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় দেয় হাতি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

ময়নাতদন্ত শেষে রোববার, ২৭ জানুয়ারির মধ্যেই তার মরদেহ দেশে আসার কথা রয়েছে।

এ ঘটনার পর দেশটির পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্পোর’-এর সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক। আমরা সবসময়েই জঙ্গলের মধ্যে পর্যটকদের গাড়ি থেকে নামতে নিষেধ করি। কিন্তু পর্যটকরা অনেক সময়েই আমাদের কথা শোনেন না’।

ডুয়ার্সে ওই বাংলাদেশিসহ গত চার দিনে আরও পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।

এইচএ/২৬.০১.১৯