মায়িশা মনাওয়ারা মিশু। হয়রতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুল যাওয়া আসার পথে ইটভাটার কালো ধোয়ায় তার শ্বাসকষ্ট হয়। স্কুলে বসে টিফিনটুকুও খেতে পারেনা ইটভাটার ধুলোতে। এথেকে বাঁচতে আকুতি জানিয়ে জেলা প্রশাসককে খোলা চিঠি দেন মিশু। দিনাজপুর জেলা প্রশাসককে লেখা আবেগভরা তার এই চিঠি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
বিদ্যালয়ে দূষিত বাতাস থেকে মুক্তির আকাঙ্খা নিয়ে ছোট্ট মিশু চিঠিতে লেখে, ‘মাননীয় ডিসি স্যার, দিনাজপুর। সালাম নিবেন। আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হয়রতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে বিপ্লব নামের একজন লোক ইটের ভাটা দিয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আমাদের শ্বাস কষ্ট হয়। চোখ জ্বালা করে। এছাড়াও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এখন আবার স্কুলের পাশে মুক্তার নামের একলোক আরেকটা ভাটা দিতেছে। তাহলে আমাদের আরো কষ্ট হবে। আমরা কিভাবে বাঁচবো। আপনি আমাদের বাঁচান। ইতি, মায়িশা মানাওয়রা মিশু, দ্বিতীয় শ্রেণী, রোল-২।’ চিঠির শেষে বাবার মোবাইল নাম্বার দেয় মিশু।
এই বিষয়ে মিশুর বাবা মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৩/৪ দিন আগে আমার মেয়ে চিঠিটা লেখে। কারণ ইট ভাটা থেকে সব সময় ইট নিয়ে ও ইট তৈরীর জন্য মাটি নিয়ে গাড়ি যাওয়া আসা করে। ফলে ধুলা-বালি এসে খাবারে পরে। বাচ্চারা স্কুলে খাবার খেতে পারছে না। খাবার মুখে দিলে খাবারের সাথে বালু থাকে।এজন্য ছোট-বড় সবারই শ্বাস কষ্ট, চোখ জ্বালা, টন্সিল রোগ সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি আমার ফেসবুক এ্যাকাউন্টে পোস্ট করি। এতে অনেকেই সাড়া দিয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহেনুল হক মিশুর বাবার সাথে দেখা করতে এসে বলেন, ওই ভাটা দুটি আদালত থেকে ৩ মাসের স্থগিত আদেশ নিয়েছে। তাই আমরা কিছু করতে পারছি না। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, আদালতে রিট আবেদন করতে। আদালত আদেশ দিলেই আমরা এসে ভাটা দুটি ভেঙ্গে দিয়ে যাবো।’