বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নে গড়া স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা হিসেবে চেনানো হচ্ছে ভারতের জাতির পিতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীকে। এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজধানীর উত্তরার ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ আছে, ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মহাত্মা গান্ধীকে জাতির পিতা হিসেবে চেনানো ছাড়াও ভারতের জাতীয় সংগীত ‘জন গণ মন’, জাতীয় ফল আম, জাতীয় পশু বাঘ, জাতীয় ফুল পদ্ম, জাতীয় পাখি ময়ূরকে দেশের প্রতিকৃতি হিসেবে পরিচিত করানো হচ্ছে।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে বিদেশি সংস্কৃতির চর্চা ও অশ্লীল পাঠ্যপুস্তক পড়ানোরও। স্কুলটির অষ্টম শ্রেণিতে ‘দ্য পার্কস অব বিং অ্যা ওয়ালফ্লাওয়ার’ বইয়ের অপ্রকাশযোগ্য অশ্লীলতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ওই স্কুলের শিক্ষকরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভারতের বিভিন্ন উৎসব, জাতীয় দিবস, বিভিন্ন প্রদেশের নাম ও রাজধানীর নাম, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের নাম শেখাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
ইতোমধ্যেই এইসব অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলটির অধ্যক্ষ হার্ষ ওয়ালকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এসব গুরুতর অভিযোগ এনে ব্যারিস্টার অনিক আর হক, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, শফিউল আযমসহ ১৫ অভিভাবকের পক্ষে গত ১৩ নভেম্বর স্কুলের অধ্যক্ষকে আদালত অবমাননার নোটিশ দেন। কিন্তু সে নোটিশের কোনো তোয়াক্কাই করেননি অধ্যক্ষ হর্ষওয়াল।নোটিশের জবাব না পেয়ে আদালত অবমাননার মামলা করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
এ মামলার শুনানিতে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হর্ষওয়ালকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই স্কুলে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা না করায় তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে ডিপিএস-এসটিএস স্কুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ওমর সাদাত।
শুনানি শেষ মামলার বাদী অনিক আর হক সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্টের রায় অমান্য করে উত্তরার ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভারতীয় সংস্কৃতি চর্চা ও ভারতীয় বিভিন্ন দিবস, ব্যক্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। এছাড়া স্কুলটির অষ্টম শ্রেণিতে ‘দ্য পার্কস অব বিং অ্যা ওয়ালফ্লাওয়ার’ বইয়ে অপ্রকাশযোগ্য অশ্লীলতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে যাচ্ছেন। সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৩ জানুয়ারি অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে তলব করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ মে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার ওপর জোর দিতে রায় দেন হাইকোর্ট। এছাড়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসসহ সব জাতীয় দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সুত্র: আজকের পত্রিকা ও যুগান্তর
এসকে/রাতদিন