রাবি শিক্ষার্থী পার্থকে বাঁচানো গেল না কিছুতেই, শোকে স্তব্ধ লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম

পার্থ সারথী রায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী। নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে অদম্য প্রত্যাশায় ভর্তি হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু মৃত্যু তার প্রত্যাশার চিরঅবসান ঘটিয়ে দিলো।

আজ বুধবার, ১ডিসেম্বর সকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। পার্থর মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

এইতো কয়েকদিন আগেও বিছানায় শুয়ে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সকলের কাছে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন পার্থ। বলেছিলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই। আমি পড়তে চাই।’ সেই পার্থই সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।

তাঁর বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় মারা যান ২০১৩ সালে। এরপর স্কুলজীবনে পার্থ কিডনী রোগে আক্রান্ত হন। দুই বছর পড়াশুনা বন্ধ রাখার পর আবারো পড়াশুনা শুরু করেন। ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে। পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন ছিলো প্রবল।

কিডনী প্রতিস্থাপনের বিপুল খরচ নির্বাহে এগিয়ে আসে তার সহপাঠিরা। রাবি’র শিক্ষার্থীরা কাজ শুরু করেন পার্থ’র চিকিৎসার জন্য তহবিল সংগ্রহে। ফটো গ্যালারী করে সংগ্রহ করেন দুই লক্ষাধিক টাকার তহবিল। স্থানীয়রাও প্রস্তুতি নিয়েছেন পার্থ’র চিকিৎসার জন্য তহবিল সংগ্রহে। কিডনী প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করার আগেই পার্থ সবাইকে কাঁদিয়ে চির বিদায় নিলেন।

সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন পার্থ’র মা। তিনি বলছিলেন, অর্থের অভাবে ছেলের চিকিৎসা ঠিকভাবে করতে পারিনি। কত মানুষের কাছে আবদার করা হয়েছিল। কিন্তু কেউই সেদিন এগিয়ে আসেনি।

পার্থ’র বড় ভাই শৈলেন্দ্র নাথ রায় হতোদ্যম হয়ে গেছেন। তিনি বলছিলেন, সে খুবেই মেধাবি ছিল। ফটো গ্যালারী করে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার তহবিল করা হয়েছিল। কিন্তু সে টাকা কোন কাজে লাগলো না।

জেএম/রাতদিন