প্রাচীনকাল থেকে বঙ্গে প্রচলিত শকাব্দ বা শক বর্ষপঞ্জি অনুসারে দিনগণনা করা হতো। শকাব্দের প্রথম মাস ছিল চৈত্র। প্রাচীন এই বর্ষপঞ্জীর সাথে হিজরি সনের সংমিশ্রনে উদ্ভব বাংলা সনের।
ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় শুরু করেন। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হত।
খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জীতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরি করেন।
৯৯২ হিজরী মোতাবেক ১৫৮৪ খৃস্টাব্দে সম্রাট আকবার এ হিজরী সৌর বর্ষপঞ্জীর প্রচলন করেন। তবে তিনি ঊনত্রিশ বছর পূর্বে তার সিংহাসন আরোহনের বছর থেকে এ পঞ্জিকা প্রচলনের নির্দেশ দেন। এজন্য ৯৬৩ হিজরী সাল থেকে বঙ্গাব্দ গণনা শুরু হয়। সেসময় বাংলা সনকে ফসলি সন বলা হতো। পরবর্তীতে এটি বঙ্গাব্দ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
হিজরী সালের প্রথম মাস মুহাররাম। ৯৬৩ হিজরী সালের মুহাররাম মাস ছিল বাংলা বৈশাখ মাস, এজন্য বৈশাখ মাসকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সেই থেকে শকাব্দের চৈত্র মাসের পরিবর্তে বৈশাখ হয় বাংলা সনের প্রথম মাস। আর ১লা বৈশাখ হয়ে যায় নববর্ষ ।