আদিতমারীর ‘রক্ত গরম’ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদের সেই ‘রক্ত গরম’ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন ৮ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।

মঙ্গলবার(১৭নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ৮ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ৯টি অভিযোগ এনে এই অনাস্থা প্রস্তাব জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফরের কাছে জমা দেন।

অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান প্রামাণিক, ভেলাবাড়ির মোহাম্মদ আলী, কমলাবাড়ির আলাউদ্দিন আলাল, সাপ্টিবাড়ির অনন্ত কুমার রায়, সারপুকুরের আজিজুল ইসলাম প্রধান, মহিষখোচার মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী, ভাদাইয়ের রোকুনুজ্জামান রোকন এবং পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী।

অনাস্থা প্রস্তাবে বলা হয়, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ফারুক ইমরুল কায়েস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণ, গালাগাল ও নান ধরণের দুর্নীতি করে আসছেন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্প (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সিংহভাগ অংশের প্রকল্প নিজে করার দাবি করেন এবং নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রকল্প তৈরি করে পছন্দের ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে আসছেন। এছাড়াও কাজ শেষ হওয়ার আগেই বিল দাবি করেন। তিনি কমিটির সদস্যদের মতামতের কোন তোয়াক্কা করেন না।

আরও অভিযোগ করা হয়, মাসিক সভা চলাকালীন সময়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় অনেককে গালাগাল ও অশোভন আচরণ করেন। ভিজিডি বা মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রেও তিনি নীতিমালা অনুসরণ না করে সিংহভাগ অংশ দাবি করেন। গত বছরে ৪০টি ভাতা চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব কারণে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে ত্রিমুখী মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় এবং সরকারী কাজে বাঁধার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পরিষদের সভায় নিয়মিত অংশ না নেওয়া, বিকেল বেলা অফিসে আসা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মোবাইল ফোনে গালিগালাজসহ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের অনাস্থা প্রস্তাবকৃত কাগজটি পেয়েছি। প্রস্তাবকৃত অনাস্থার অব্যশই গুরুত্ব দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস সাংবাদিকদের জানান, অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে আদিতমারীর ইমনওমহ ১৮ কর্মকর্তা নানা অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে ‘প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য’ লিখিত আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গঠিত তন্দ কমিটি গত সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। একই দিনে ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা চেয়েছেন। এ ঘটনায় উভ পক্ষ আদিতমারী থানায় পাল্টাপাল্টি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছে।

এনএ/রাতদিন