কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ইউপি নির্বাচনে কোনো ভোট পাননি নজরুল ইসলাম। তিনি রামখানা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থী টিউবওয়েল প্রতীকে নিয়ে নির্বাচন করেছেন। বিষয়টি বিস্তর আলোচনার জন্ম দিয়েছে এলাকায়।
তৃতীয় দফায় ২৮ নভেম্বর রামখানাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ড সদস্য পদে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নাখারগঞ্জ পশ্চিম রামখানা দেওয়ানটারী গ্রামের ইজ্জত তুল্ল্যার ছেলে নজরুল ইসলাম।
প্রতীক প্রাপ্তির পর বিজয়ী হতে অন্যান্য প্রার্থীর মতো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণা চালান তিনি। করেন উঠান ও খুলি বৈঠক। সবার মতো দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে প্রতীক ও প্রার্থীর প্রচারণা। পোস্টার লাগানো হয় ওয়ার্ডের সর্বত্রই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। সবশেষে ভোটের দিন কেন্দ্রে টিউবওয়েল প্রতীকের ১ জন এজেন্টও ছিল। অথচ রোববার দিনশেষে গণনা করে দেখা গেছে তিনি একটি ভোটও পাননি।
তাহলে তিনি, তার স্ত্রী, পরিবারের অন্যান্য সদস্য, আত্মীয়স্বজন, তার শুভাকাঙ্ক্ষী, কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ট কেউই কি তাকে ভোট দেয়নি। এটি কিভাবে সম্ভব। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে এলাকায়।
নজরুল ইসলাম টিউবওয়েল প্রতীকে কোনো ভোট না পেলেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরজামাল শেখ ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৭১৬, ফজলে রহমান বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪, সফিকুল ইসলাম তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৭৭ ভোট।
ভোটের এ ফলাফলে কোনোভাবে হিসেব মিলাতে পারছেন না প্রার্থী নজরুল ইসলাম নিজেও। তিনি জানান, এ ঘটনায় আমি মর্মাহত। অপ্রত্যাশিত এ ফলাফল শোনার পরে আমি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে গেছি। লজ্জায় বাইরে যেতে মন চায় না। কাল থেকে নিজেকে আমি প্রায় ঘরবন্দি করে ফেলেছি। ভোটের কথা মনে উঠলেই হাউমাউ করে আমার কান্না আসছে।
তিনি বলেন, যদি কর্মী-সমর্থকরা আমাকে ধোকা দেয় তারপরও আমি, আমার স্ত্রী মেহরা খাতুন, বড় ছেলে মফিজুল ইসলাম, তার স্ত্রী কল্পনা খাতুন, মেজ ছেলে এনামুল হক, তার স্ত্রী ফরিদা বেগমসহ রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনরা ভোট দিলে অন্তত দেড়শত থেকে দুইশত ভোট পাওয়ার কথা। সেখানে শূন্য ভোট হয় কিভাবে। আমি এটা মেনে নিতে পরছি না। এ ফলাফলে আমি পুরোপুরি বেইজ্জত হয়ে গেছি।
তিনি সংশ্লিষ্ট অফিসে ভোট পুন:গণনার আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন।
তার আবেদন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনোয়ার হোসেন।