রংপুরের হারাগাছ পৌরসভায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা দেবী চৌধুরানীর ঘাঁট হিসেবে খ্যাত ধুমনদী। উত্তর জনপদের সবচেয়ে বড় অশ্বাক্ষুরাকৃতি বিল এটি। তবে বিল হলেও এলাকার মানুষ এটিকে নদী হিসেবেই চেনে, নদী নামেই ডাকে। অথচ এই ঐতিহাসিকতার পিছনে রয়েছে একরাশ আধারের গল্প।
প্রায় ৫০ বছর ধরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এই নদীর দুই পাশের প্রায় ২০ হাজার লোক যাতায়াত করছেন। এর দুই পাশে রয়েছে একাধিক স্কুল ও মাদ্রাসা। যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে এসব স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘ ৫০ বছরের এই ভোগান্তি দুর করতে উদ্যোগী হননি জনপ্রতিনিধিদের কেউই। ভোটের আগে কথা ঠিকই দেন, কিন্তু পরে আর কথা রাখেন না । ফলে বিলের দুই পাশের মানুষের দীর্ঘশ্বাস কেবলই ভারী হচ্ছে।
১৪৪ একর জমির ওপর এই ধুমনদী বিল ইতিহাসেরও অমোঘ স্বাক্ষী। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা দেবী চৌধুরানী এখান থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বিলের উপর স্থাপিত সাকোটি প্রতি বর্ষা মৌসুমে পারাপারের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়ে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই পারের মানুষ এতেই চলাচল করে।
এলাকার বৃদ্ধ আজহারুল ইসলাম, সাইয়াদুলসহ অনেকেই জানান, বিভিন্ন সময় স্কুলগামী ও বৃদ্ধ লোকজন সাঁকো ভেঙে পানিতে পড়ে আহত হয়েছেন। এই সাঁকোটিতে পারাপারে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাউনিয়া পীরগাছার এমপি. উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র সরকারদলীয় লোক। তবুও তারা বিষয়টি নিয়ে কেন ভাবছেন না, তা তাদের বোধগম্য নয়।
স্থানীয়দের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে প্রতিটি নির্বাচনের আগেই প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিজ নির্মাণের। কিন্ত কেউ কথা রাখেন নি।
হারাগাছ পেীর মেয়র হাকিবুর রহমান সৌন্দর্যহানির দোহাই দিয়ে বলেন, এখানে ব্রিজ নির্মাণ হলে বিলের সৌন্দর্যহানি ঘটতে পারে। তবে একটি ফুট ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
ধুমনদীকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মতামত দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী যেন তাদের প্রতি কৃপা দৃষ্টি দেন। তাহলেই দীর্ঘ ৫০ বছরের দীর্ঘশ্বাস মুছে যাবে।
সাগর/জেএম/রাতদিন