করোনা ক্রান্তিকালেও, জলঢাকায় একজন মানবিক ডাক্তার মেসবাহ!

করোনাভাইরাস আতঙ্কের এই ক্রান্তিকালে যখন অনেক চিকিৎসকই প্রাইভেট প্রাকটিস থেকে বিরত রয়েছেন। রোগীরা যখন ডাক্তারের চেম্বারে চেম্বারে ঘুরে চিকিৎসাহীন শুন্য হাতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। ঠিক তেমনি এক সময়ে নীলফামারীর জলঢাকায় আমাদের হাসপাতাল নামে বে-সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা অব্যহত রেখেছেন ডা. মেসবাহুর রহমান মেসবাহ।

জানা গেছে, উপজেলাটিতে পাঁচটি প্যাথলজি সেন্টার ও ছয়টি বে-সরকারী হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, এসব প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক এবং বহিরাগত অতিথি চিকিৎসকসহ প্রায় ৩০জন চিকিৎসক চার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই চিকিৎসকদের অনেকেই প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধ রেখেছেন। ফলে নানা উপসর্গের জটিল রোগিরা পড়েছেন দুর্ভোগে ।

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটায় সরেজমিনে দেখা যায়, পেটে ব্যাথা নিয়ে আমাদের হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর অপেক্ষায় আছেন মরিয়ম(৩৩)।

তিনি জানালেন, ‘বিকালে সরকারী হাসাতালে গেছি। ডাক্তার দুর হতে কথা কওচে। নাড়াচাড়া তো দুরের কথা, কাছেও আসেনা। তাদের দেখার ধরন পছন্দ হয় নাই। পরে বিভিন্নখানে গেছি কোন ডাক্তার পাই নাই। তাই এইখানে ডাক্তার দেখাবার আসচি।’

এসময় ডাক্তারের সাক্ষাৎকার শেষ করে বের হলেন লাভলু মিয়া। শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত লাভলু জানালেন,‘আমার খালু প্রেসারের রোগি। দুপুরের পর থেকে তার সমস্যা বড়ে যায়। সরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্যাথলজি কোথাও ডাক্তার না পেয়ে শেষে এখানে এসে ডাক্তার দেখালাম।

আমাদের হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা জানান, ‘করোনা আতঙ্কে অনেক চিকিৎসক এখন বাইরের চেম্বার প্রাকটিস বন্ধ রেখেছেন। আগের মতো রোগিদের উপস্থিতিও নেই। তারপরেও ডা. মেজবাহ এখানে নিয়মিত রোগী দেখছেন।এতে আগত রোগিদের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে।’

এবিষয়ে ডা. মেসবাহুর রহমান মেসবাহ বলেন, ‘সেবার ব্রত নিয়ে পড়ালেখা করেছি। আল্লাহর রহমতে ডাক্তার হয়েছি। তাই, দেশের ক্রান্তিকালে জাতিকে সুস্থ্য রাখতে নিজের জীবনের ঝঁকি নিয়েও নিয়মিত রোগী দেখছি।’

এসময় তিনি করোনা থেকে মুক্ত থাকতে সকলকে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলাসহ অন্যান্য সরকারী বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।

জেএম/রাতদিন