‘করোনা মহামারি থাকতে পারে আরও ৪ থেকে ৫ বছর’

করোনাভাইরাস মহামারির শেষ এবং মহামারি পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায় বিশ্বের ফিরতে আরও চার থেকে পাঁচ বছর লাগতে পারে। সিঙ্গাপুরে এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী মহামারি নিয়ে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তবে মহামারি ফুরিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিকতায় ফিরতে পারে বলে আশাও প্রকাশ করেছেন তিনি।

সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের (আইপিএস) সিঙ্গাপুর পার্সপেক্টিভ-২০২১ সম্মেলনে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী লরেন্স অং বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই মহামারি শেষ হয়ে যাবে এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবে করোনা মহামারির অবসান ঘটলে বিশ্ব কীভাবে ভবিষ্যৎকে পুনর্নির্মাণ করতে পারে সেব্যাপারে ধারণা দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, সময়ের পরিক্রমায় এই মহামারি হয়তো কেটে যাবে। কিন্তু চূড়ান্তভাবে মহামারির অবসান ও করোনা পরবর্তী স্বাভাবিক পরিস্থিতির শুরু দেখার আগে আমাদের আরও চার থেকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। কিন্তু করোনা-পরবর্তী বিশ্ব কেমন হবে? তা কেউই বলতে পারেন না।

এই মহামারি আগামী বছরগুলোতে সমাজের কাঠামো কীভাবে পাল্টে দেবে সেটি নিয়েও বড় অনিশ্চয়তা আছে।

তিনি বলেন, মাস্ক পরিধান, জনসমাগম এড়িয়ে চলার মতো নিরাপদ ব্যবস্থাপনার করোনা বিধিগুলো চলতি বছর মেনে চলতে হবে। এসব করোনা বিধি আগামী বছরেরও একটি ভালো অংশ হতে পারে।

‌‌‘এর বাইরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা বৈশ্বিক ভ্রমণ পুনরায় শুরু করতে পারে। তবে পুরো বিশ্বের টিকাদান খুব দ্রুত অথবা সহজ হবে না।’

চলতি বছরের তৃতীয়ার্ধ্বে সিঙ্গাপুরের সরকার দেশটির সব বাসিন্দাকে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু এই টিকাদানে ধাক্কা আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন লরেন্স অং। তিনি বলেছেন, ভাইরাসের পরিবর্তিত নতুন ধরনটির ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের বর্তমান ভ্যাকসিনগুলো কাজ নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন প্রজাতির করোনা মোকাবিলার জন্য ভ্যাকসিনেও পরিবর্তন আনতে হবে।

সুতরাং এখনও আমাদের সামনে ভয়াবহ এক অনিশ্চয়তা রয়েছে। মূলকথা হলো- আমরা অংশীদারিত্বের এক বিশ্বে বসবাস করছি; যেখানে প্রত্যেকে নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউই নিরাপদ নন।
সিঙ্গাপুরের শিক্ষামন্ত্রী লরেন্স অং

মন্ত্রী বলেন, ইতিবাচক এক পরিস্থিতিতে এর অর্থ প্রত্যেক বছরের অন্যান্য ফ্লুর টিকার মতোই করোনার টিকাটিও হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সম্ভবত আমাদের এমন একটি টিকা তৈরি করতে হবে; যা করোনার সব ধরনে কাজ করবে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কোনও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি এই ভাইরাসের লাগাম টানতে পারবেন না।

মহামারি করোনাভাইরাসে সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৩৩৬ জন এবং মারা গেছেন মাত্র ২৯ জন। সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পাড়ি জমানো প্রবাসীরা।

সূত্র: চ্যানেল নিউজ এশিয়া।

এনএ/রাতদিন

মতামত দিন