কাজের খোঁজে রংপুরের শ্রমিকরা ছুটছেন রাজশাহী

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন। মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল সকাল সোয়া ১০ টা। প্লাটফর্ম এবং প্লাটফর্মের বাইরে বেশ কয়েটি জটলা। সবাই মেঝেতে বসে আছেন। প্রত্যেকের সঙ্গে একটি করে ব্যাগ। হাতে হাতে কাস্তে, ‘বাঁকুয়া’ বা ‘বাঙ্কুয়া’। তারা অপেক্ষা করছেন চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের।

কথা বলে জানা গেছে, তাদের সকলের বাড়ি নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুরসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। কাজে সন্ধানে তারা যাবেন নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী, জয়পুরহাট জেলায়। কারণ ওই সব এলাকায় এখন পুরোদমে চলছে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। এছাড়া নিজেদের এলাকায় এখন তেমন কোনো কাজও নেই।

তাদের একজন মো. ইলিয়াস (৩৫)। বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই কাচারীপাড়ায়। তিনি বলেন, ‘হামরা কামলা (দিনমজুর) মানুষ। দিনমজুরী করি যে আয় রোজগার হয় তা দিয়ে চলে হামার সংসার। এখন হামার এলাকাত কোনো কাম নাই। বাড়িত বসি থাকলে সংসার চলে না। সেই বাদে হামরা কাজোত যাবার নাগছি।’

দিনমজুর কাবুল বলেন, ‘নওগাঁয় কাজে খোঁজে বের হয়ছি। কাজ যয়দিন হয়, তয় দিন থাকিম। কাজ না থাকলে বাড়ি চলি আসিম।’

ছবি : রাতদিন.নিউজ

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় ১০ দিন ধরে এই সব দিনমজুররা কাজের সন্ধানে ছুঁটছেন। আর অন্য যানবাহনের চেয়ে ট্রেনে খরচ কম পড়ায় তারা মূলত ট্রেনেই যাতায়াত করে থাকেন। এ সময় ট্রেনগুলোতে দিনমজুরদের চাপে প্রচন্ড ভীড় হয়। অতিরিক্ত ভীড়ে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদেও যান।

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার মো. আলমগীর হোসেন জানান, সপ্তাহখানেক ধরে দিনমজুরদের চাপে ট্রেনগুলোতে ভীষণ ভীড়। অনেকে ট্রেনের টিকিট কাটার পরও বগিতে উঠতে পারেনা। তখন আমাদের কাছে টিকিটের টাকা ফেরত চেয়ে বসে। এ সময় আমরা কিছুই করতে পারি না।

এইচএ/রাতদিন