কালীগঞ্জে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে বই বিতরণ,সমালোচনায় মাদ্রাসা সুপার-সভাপতি

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় গোড়ল দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপারসহ শিক্ষকরা জুতা পায়ে দিয়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে বই বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।

সেই ছবি আবার নিজেদের ফেসবুকে আপলোড করে সমালোচনায় পড়েছেন তারা । এ ঘটনার পর থেকে জেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে আ’লীগ নেতা ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুর আমিনের বিরুদ্ধে । 

নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বই বিতরণ করে সারাদেশে। সেই বই বিতরণের সময় উপজেলার গোড়ল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোবাশ্বের আহমেদ ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুর আমিনসহ শিক্ষকরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করেন ।

সেই ছবি তুলে তারা নিজেদের আইডিতে আপলোড করলে মুহুতেই ভাইরাল হয়ে যায়। জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে ওঠে বই বিতরণের ঘটনায় ফেসবুকসহ জেলা জুড়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠে।

ছবিতে দেখা যায় জুতা পায়ে দিয়ে বই বিতরণ করছেন গোড়ল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুর আমিনসহ মাদ্রাসার সুপার মোবাশ্বের আহমেদ

ছবিতে দেখা যায় জুতা পায়ে দিয়ে বই বিতরণ করছেন গোড়ল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুর আমিনসহ মাদ্রাসার সুপার মোবাশ্বের আহমেদ, সহকারী  শিক্ষক(কম্পিউটার)  মোঃ আব্দুর রশিদ, বিএসসি শিক্ষক আনিছুর রহমান, মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান ছোটন ও অন্যান্য শিক্ষকরা ।

সংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, এভাবে শহীদ মিনারে বেদিতে জুতা পায়ে উঠে বই বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড খুবই দুঃখজনক। দিন দিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বংস করছে এসব শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিরা । ওই মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষকদের কাছে যদি এমন শিক্ষা পাই, তবে আমরা তাদের কাছে কি শিখব। প্রশাসন এর ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করবেন।

জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠা সকলকে শাস্তির মুখোমুখি আনার দাবি জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসিন টুলু বলেন, দেশের প্রতি যাদের ভালোবাসা নেই, তারা কিভাবে শিক্ষক হিসাবে থাকে। অবশ্যই ওইসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ নিবে প্রশাসন । 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলগের সাধারণ সম্পাদক নুর আমিন বলেন, ব্যাস্ততার কারণে জুতা পায়ে দিয়ে শহীদ মিনারে উঠে পড়েছি। এ জন্য আমি নিজে লজ্জিত ।

বই বিতরণের সময় জুতা পায়ে ছিল কিনা আমার মনে নেই বলে ফোন কেটে দেয় গোড়ল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোবাশ্বের আহমেদ।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠে বই বিতরণ করা ঠিক নয়। এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যদি প্রমাণ মেলে, তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এনএ/রাতদিন