গণপিটুনিতে মৃত্যু: চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশী, রংপুরে নেই

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব মতে, এ বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) সারা দেশে ৩৬ জন গণপিটুনিতে মারা গেছেন। গত চার দিনে ৭ জন মিলিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা ৪৩। তবে এতে রংপুর বিভাগের কেউ নেই। আর এই গণপিটুনির অধিকাংশ ঘটনাই ঘটেছে গুজব থেকে।

চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশী, রংপুরে নেই:

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ছয় মাসে যে ৩৬ জন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, তার মধ্যে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি, ১৭ জন। এ ছাড়া ঢাকায় নয়জন, খুলনায় পাঁচ, সিলেটে দুজন, বরিশালে দুজন এবং রাজশাহীতে একজন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।

এতে দেখা যায়, চলতি বছরে গণপিটুনির শিকার হয়ে রংপুরে কেউ মৃত্যুবরণ করেনি।

তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ হলেও গুজবের প্রেক্ষিতে আহতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে।

এক গবেষণায় জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো ঘনবসতির শহরে ছোটখাটো ঘটনায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে নিম্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে এমন ঘটনা বেশি হয়।

ছেলেধরা গুজবে ৪ দিনে ৭ মৃত্যু:

গত বৃহষ্পতিবার ১৮ জুলাই নেত্রকোনায় ব্যাগে করে এক শিশুর ছিন্ন মাথা নিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় এক যুবককে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। এরপর শনিবার বিভিন্ন স্থানে পাঁচজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার খবর পাওয়া যায়। ওই দিন রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত একজন (বয়স আনুমানিক ৫৫) নিহত হয়েছেন। উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের দেওড়াছড়া চা–বাগান এলাকার কয়েকজন চা–শ্রমিকের ভাষ্য, গুজবের ওপর ভিত্তি করে উত্তেজিত কিছু লোক ওই ব্যক্তিকে পিটুনি দেন। অবশ্য পুলিশ নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি।

শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত সিরাজ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সিদ্ধিরগঞ্জের ওসি শাহীন পারভেজ জানান, সিরাজ বোবা ও বধির ছিলেন। তিনি ছেলেধরা নন।

গুজবে কান দেবেন না:

সম্প্রতি গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সদর দপ্তর গত শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মর্মান্তিকভাবে কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে। গুজব ছড়িয়ে ও গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ। দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

জেএম/রাতদিন