চীনে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুধু চীনেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০৪ জনের। এ ছাড়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথমবারের মতো চীনের বাইরে ফিলিপাইনে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য ফিলিপাইনে মারা যাওয়া ব্যক্তিও চীনের নাগরিক।
চীনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে নতুন করে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৪ জনে।
এ ছাড়া দেশটিতে নতুন করে আরও ২ হাজার ৫৯০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজারে।
চীনের সর্বত্র ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় উৎপত্তিস্থল হুবেইয়ের বেশিরভাগ এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বেশিরভাগ সড়ক আটকে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।
সংক্রমণ ঠেকাতে চীনের বিভিন্ন শহরেও নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উত্তর চীনের দেড় কোটি বাসিন্দার তিয়ানজিন শহরের সব স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফিলিপাইনে চীনের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ফিলিপাইনে গিয়েছিলেন চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে, যে শহরেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি। এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪টি দেশে মানুষের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিলেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়তে থাকায় গত বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরপর এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশগুলো ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি চীন সফর করা বিদেশিদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইসরায়েল। এ ছাড়া দেশগুলো তাদের নিজেদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণ না করার জন্য সতর্কও করেছে।
এর বাইরে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও নেপাল তাদের স্থলসীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া কয়েক ধাপ এগিয়ে পাপুয়া নিউগিনি সমুদ্র ও বিমানবন্দর দিয়ে এশিয়া থেকে কারও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।