রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় রংপুর সদর ৩ আসনের এমপি সাদ এরশাদকে তার পল্লী নিবাস বাসভবনে লাঞ্চিত করার ঘটনায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক টিপুকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা পল্লী নিবাস বাস ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বাসভবনের নীচ তলায় থাকা চেয়ার টেবিল ভাংচুর করেছে।
তাদের দাবি পুলিশের হাতে আটক জাপা নেতা টিটোকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত তাদের ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তবে জাপা নেতাকে আটক নয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের তাজহাট থানার ওসি রোকনুজ্জামান।
জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা অভিযোগ করেন, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারন সম্পাদক টিপু সুলতান দলের কয়েকজন নেতা কর্মীকে নিয়ে প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের নগরীর দর্শনা এলাকায় অবস্থিত পল্লী নিবাস বাসভবনে সন্ধার দিকে যান।
এ সময় রংপুর সদর ৩ আসনের এমপি এরশাদ পুত্র সাদ এরশাদ ও তার স্ত্রী সহ বাসার নীচ তলার বৈঠক খানায় বসে ছিলেন। জাপা নেতা টিপু সুলতান একটি ডিও লেটারে সাদ এরশাদের স্বাক্ষর নেবার জন্য তার কাছে যাবার আগেই সাদ এরশাদের এপিএস প্রিন্স ও অপর একজন তার হাত থেকে ডিও লেটার কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেন।
এ নিয়ে জাপা নেতা টিপু সুলতানের সাথে সাদ এরশাদের এপিএস প্রিন্স এর হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা সাদ এরশাদকে গালাগাল ও ধাক্কাধাক্কি করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে জাপা নেতা টিপু সুলতান টিটোকে আটক করে তাজ হাট থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনা জানাজানি হলে জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা পল্লী নিবাস বাস ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে রংপুর সিটি মেয়র ও জাপা রংপুর মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা সহ জাপা ও যুবসংহতি, ছাত্রসমাজের নেতা কর্মীরা দ্রæত পল্লী নিবাসের সামনে রাস্তা অবরোধ করে জাপা নেতা টিপুর মুক্তি দাবি করে বিক্ষোভ করে।
তারা সাদ এরশাদের এপিএস প্রিন্সকে অবাঞ্চিত ঘোষনা ও তার গ্রেফতার দাবি করে। রাত সাড়ে ১০ দশটার দিকে জাপা অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা পল্লী নিবাস বাস ভবনের প্রদান ফটকের সামনে সমাবেশ করে। সেখানে বক্তব্য রাখেন যুব সংহতি রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির সাধারন সম্পাদক শান্তি কাদেরী, মহানগর ছাত্রসমাজের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত আসিফসহ নেতারা।
এ সময় অভিযোগ করা হয়, এমপি নির্বাচিত হবার পর সাদ এরশাদ দলের নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলেন না তাদের মুল্যায়ন করেন না। বরং তিনি প্রিন্স নামে অরাজনৈতিক ব্যাক্তিকে এপিএস বানিয়ে তার দ্বারা সকল কাজ কর্ম করান।
এ ব্যাপারে দলের নেতা কর্মীরা তার কাছে অনেকবার অভিযোগ করলেও সাদ এরশাদ তাদের কথা আমল দেন না।
বক্তারা আটক জাপা নেতা টিপুর মুক্তি ও সাদ এরশাদের এপিএস প্রিন্সকে অবাঞ্চিত ঘোষনা এবং তার গ্রেফতার দাবি করেন।
এদিকে সাদ এরশাদের সাথে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার এপিএস প্রিন্স জানান তিনি কাউকে লাঞ্চিত করেননি ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না। তাকে হেয় করার জন্য এসব প্রচার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তাজহাট থানার ওসি রোকনুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে এ ব্যাপারে সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।