নড়বড়ে লাইনে ক্লিপ ‘ছাড়াই’ চলছিল ট্রেন!

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। ওই এলাকার রেল লাইন ছিল নড়বড়ে। রেল লাইনে ছিল না ক্লিপ।

অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। রোববার, ২৩ জুন দিবাগত রাতে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে একটি ব্রিজ থেকে ট্রেনের কয়েকটি বগি ছিটকে খালে পড়ে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

ক্লিপ ছাড়া নড়বড়ে রেললাইন নিয়ে ‘কতৃপক্ষের উদাসীনতাকে’ দায়ী করে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন লুৎফর রহমান রাজু নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে চারটি ছবিসহ তিনি পোস্টটি দিয়েছিলেন। পাঠকদের জন্য হুবুহু সেই পোস্টটি তুলে ধরা হলো :

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা যে কোন সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা।

রেললাইনে ক্লিপ ছাড়াই চলছে রেলগাড়ি!

ছবি : লুৎফর রহমান রাজুর ফেসবুক পেজ থেকে

প্রথম ছবিটা আপনাদেরকে বুঝাবে এই ক্লিপগুলোর প্রয়োজনীয়তা। পরের ছবিগুলো দেখুন- এই ক্লিপগুলো নেই। স্থান কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলওয়ে এর আশপাশ।

ছবি : লুৎফর রহমান রাজুর ফেসবুক পেজ থেকে

এমন অবাক করা দৃশ্যটি গত ১৪ ফেব্রুয়ারী নজরে পড়ে বরমচাল কালা মিয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী Faju Choudhury (ফাজু চৌধুরীর)। সাথে সাথে একজন সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে সবার দৃষ্টি গোচর করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন। এটি ছিল তার দায়িত্ববোধ থেকে করা একটি সচেতনতামূলক পোস্ট । কিন্তু অবাক হবার বিষয় হল, আজ পর্যন্ত এলাকার এমন কেউ কি বিষয়টি নিয়ে কোন প্রকার আলোচনায় গিয়েছেন স্থানিয় বরমচাল রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টারের কাছে?

প্রশ্নটা থেকেই যায়! আমাদের কি আরো একটু খেয়ালি হওয়া যায়না। বিষয়টি নিয়ে ষ্টেশন মাষ্টারকে অবগত করে অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা রোধ করা যায় না? রেল লাইনে ব্যবহৃত এসব লোহা খুব ভালো মানের লোহা । দাম পাওয়া যায় মনে হয় ভালো। অথচ এর জন্য যে জীবনের দাম দিতে হতে পারে সেটা ভাবার সময় কই? কর্তৃপক্ষের এদিকে নজর নেই। ট্রেনলাইনও নড়বড়ে। ট্রেন চলার সময় বাসের মতো ঝাকুনি খায়। লাইনের যে জোড়াগুলো আছে সেগুলোর ভিত্তি দুর্বল। লাইনচ্যুতি সময়ের ব্যাপার।

লাইনের পাশ দিয়ে রাস্তা ঘাট, দোকান পাট। যেকোন সময় ট্রেন লাইনচূত্য হয়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। আমরা আশা করব এলাকার জনসচেতন নাগরিকরা যারা এলাকা নিয়ে সবসময় ভালো কিছু চিন্তা করে, তারা সবাই নিজেদের মূলবান কিছু সময় নষ্ট করে হলেও বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তব্যরত মাষ্টারের সাথে আলোচনা করে বিষয়টির একটি সমাধান করবেন এমনটাই প্রত্যাশা…।

এবি/রাতদিন