পঞ্চগড়ের আকলিমাকে আর হাত পাততে হবে না, পাশে দাঁড়ালেন তথ্যমন্ত্রী

পঞ্চগড়ের ১২ বছর বয়সী আকলিমা আক্তার অসুস্থ বাবার জন্য ওষুধ ও খাবার জোগাতে ভিক্ষা করার বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসার পর পরিবারটির সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তাঁর উদ্যোগে আজ শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আকলিমা ও তার অসুস্থ বাবা মো. হেলালের হাতে দুটি ভ্যানগাড়ি ও নগদ অর্থসহায়তা তুলে দেন পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট।

জানা গেছে, অসুস্থ বাবা মো. হেলালকে নিয়ে পঞ্চগড়ে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে শিশু আকলিমা আক্তার। হেলালের পৈতৃক বাড়ি ছিল মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায়। ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। তার প্রথম স্ত্রীর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। দ্বিতীয় বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে সাভার এলাকায় আলাদা থাকতেন হেলাল। সেখানেই জন্ম হয় আকলিমার।

শিশু আকলিমার বয়স যখন দুই বছর তখন ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আকলিমার মা নাসিমা আক্তার। এরপরই ছোট মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন হেলাল। দীর্ঘদিন আশপাশের লোকজনের কাছে মেয়েকে রেখে কাজে যেতেন তিনি। অনেক কষ্টে মেয়েকে বড় করে স্থানীয় একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়েছেন। তিন বছর আগে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হন তিনি। ফলে এখন আর কাজ করতে পারেন না।

সেখান থেকে মেয়ে আকলিমাকে নিয়ে ট্রেনে চেপে তিনি চলে আসেন পঞ্চগড়ে। আকলিমা প্রতিদিন সকালে রেলস্টেশন এলাকায় হোটেল থেকে পরোটা কিনে বাবাকে খাইয়ে এবং নিজে খাওয়ার পর বাবাকে ওষুধ খাইয়ে ভিক্ষার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। জেলা শহর ছাড়াও আশপাশের বাজারে ভিক্ষা করে দিনে প্রায় দুই থেকে আড়াইশ টাকা পায় সে। এই টাকা দিয়েই বাবার জন্য ওষুধ ও খাবার কেনে আকলিমা। এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিষয়টি চোখে পরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের।

আকলিমার বাবা মো. হেলাল বলেন, আমাদের মতো নগণ্য মানুষদের খবর তিনি রাখেন। এখন আর আমার শিশু মেয়েটিকে ভিক্ষা করতে হবে না। দুটি ভ্যান কাউকে ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে যে আয় আসবে তা দিয়েই দুজনের সংসার ও ওষুধপত্র কেনা যাবে। এখন মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাবো। পাশাপাশি তাকে সেলাইয়ের কাজ শেখাবো।

পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, তথ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক শিশুটিকে সহায়তার জন্য আমার কাছে কিছু টাকা পাঠান। সেই টাকা থেকে তাদের হাতে দুটি ভ্যান ও নগদ অর্থসহায়তা তুলে দেয়া হলো।

এবি/রাতদিন