বরখাস্ত হওয়া এক মালি ওয়াহিদা খানমকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত!

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনায় রবিউল ইসলাম (৪৩) নামে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এক কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ। ইউএনও কার্যালয়ের মালি পদে চাকুরিরত অবস্থায় ৫০ হাজার টাকা চুরির দায়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আটক রবিউল পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেছে।

আজ শনিবার, ১২সেপ্টেম্বর বিকালে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য।

তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার রবিউলকে আটক করা হয়। সে জেলার বিরল উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের বিজোড়া গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মালি পদে নিযুক্ত ছিল সে।

ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, ‘গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর থেকে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিউল ইসলাম নামে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সরকারি কর্মচারীকে আমরা আটক করি। আটক রবিউল প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে নিজের দায় স্বীকার করেছে। তার তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করেছি। এছাড়া তার বক্তব্য ও জব্দ করা আলামত সিসিটিভ ফুটেজের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে। আমরা অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে তার রিমান্ড আবেদন করবো।’

এদিকে প্রেস ব্রিফিং শেষে আটক রবিউল ও এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত আসাদুলকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসাদুল ইসলাম সাত দিন ধরে রিমান্ডে ছিল। আজ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করে। এছাড়াও ইউএনওর বাসভবনের নৈশপ্রহরী নাদিম হোসেন পলাশকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় রবিউল ইসলামকে আটক করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

গত ২ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে গেটে দারোয়ানকে বেঁধে ফেলে তারা। পরে বাসার পেছনে গিয়ে মই দিয়ে উঠে ভেনটিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে হামলাকারীরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে তারা। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুরে ও পরে রংপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমান তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এইচএ/রাতদিন