পীরগঞ্জের সাদ্দামের মরদেহ ৪ মাস ধরে সৌদির হিমঘরে, কান্না থামছে না বৃদ্ধ মায়ের

সাদ্দাম হোসেন (২৫) নামে যুবকের মরদেহ প্রায় চার মাস ধরে পড়ে আছে সৌদি আরবের হিমঘরে। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ীর প্রয়াত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে

ওই যুবককে সেদেশে পাঠানো ট্রাভেল এজেন্সির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সাদ্দাম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তবে পরিবার দাবি করছে, সাদ্দামকে হত্যার পর মরদেহ সিঁড়িতে ঝুলে রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা গেছে, পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়নের হাজীপুরের প্রয়াত মমদেল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বুলু হাজী জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মোহনা ওভারসীজের মাধ্যমে স্থানীয় অনেককেই সৌদিতে পাঠিয়েছেন। তিনিই প্রায় ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে ২০১৯ সালের ১৭ মে ৯০ দিনের ভিসায় সৌদির রিয়াদে পাঠায় সাদ্দামকে।

ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও সাদ্দামকে বৈধ কাগজপত্র (আকামা) না দেয়ায় গত ২১ এপ্রিল কথিত দালাল বুলু হাজীর সাথে সাদ্দামের পরিবারের লোকজন কথা কাটাকাটি হয়। এরপর থেকেই পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয় সাদ্দামের। গত ২৭ এপ্রিল বুলু হাজী এলাকায় প্রচার করে সাদ্দাম করোনায় মারা গেছে।

এ কথা লোকমুখে শুনে সাদ্দামের বড় ভাই রব্বানী মিয়া ২৮ এপ্রিল ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, সাদ্দামের কর্মস্থলে কোন লোক করোনায় মারা যায়নি।

রব্বানী মিয়া জানান, ‘হাবিব রহমান’ নামের এক ফেসবুক আইডিতে ২৯ এপ্রিল সিঁড়িতে ঝুলন্ত একটি লাশের ভিডিও আপলোড করা হয়। ভিডিও দেখে মরদেহটি সাদ্দামের বলে শনাক্ত করেন তিনি। এই জটিলতায় তখন থেকে গত এপ্রিল থেকে আজও সৌদির হিমঘরে লাশটি পড়ে আছে।

বুলু হাজী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, রাজধানীর বনানীর মোহনা ওভারসীজের মাধ্যমে তিনি এলাকার অনেককে সৌদিতে পাঠিয়েছেন। সাদ্দামকেও ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওই ওভারসীজের রিয়াদ প্রতিনিধি আলাউদ্দিন তাকে কাজ ও বৈধ কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেয়নি। সেখান থেকেই জানানো হয়েছে সাদ্দাম করোনায় মারা গেছে।

ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শাহিন মিয়া বলেন, সৌদিতে সাদ্দামকে আকামা দেয়া হয়নি। আর মরদেহের বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।

এদিকে সাদ্দামের মৃত্যুর পর থেকে তার মা হাছনা বেগমসহ তার পরিবারে যেন কান্না থামছে না। ছেলের মরদেহের অপেক্ষায় দিনরাত কেঁদে চলেছেন তার বৃদ্ধা মা। তিনি ছেলের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় এমপি ও সংসদের স্পীকারের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এবি/রাতদিন