পীরগঞ্জে খাদ্যগুদামে ধান: লাভের গুড় খাচ্ছে পিপড়ায়

পীরগঞ্জের খাদ্য গুদামে ধান দিতে গিয়ে চরম হয়রানি ও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সাধারণ কৃষক। ধানের উৎপাদন খরচ পুষিয়ে দিতে সরকার সরাসরি কৃষকের কাছে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিলেও পীরগঞ্জে দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। গুদামে ধান দিতে গিয়েই লাগছে চার থেকে ৫ দিন। রয়েছে ব্যাংক হিসাব খোলার ঝক্কি। সবমিলিয়ে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করে লাভের পরিবর্তে লোকসানই গুনছেন সাধারণ কৃষক।

জানা গেছে, এবারে সরকারিভাবে পীরগঞ্জে ৬৯১ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কেনার সিদ্ধান্ত রয়েছে। উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কৃষকরা উপজেলা সদর ও ভেন্ডাবাড়ী খাদ্য গুদামে ওই ধান সরবরাহ করবে। প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে প্রতি মন ধানের মুল্য দাড়ায় ১ হাজার ৪০ টাকা।

এ জন্য মাঠপর্যায়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা এবং চেয়ারম্যানরা কৃষকদের নামের তালিকা করেন। এরপর ওই তালিকা উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির অনুমোদনের পর খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কয়েকদিন সময় লাগে। তালিকা তৈরি থেকে গুদামে ধান সরবরাহ এবং ব্যাংকে ১০ টাকায় একাউন্ট (হিসাব) খোলার পর চেক গ্রহণ করতে গিয়ে কৃষকদের চার-পাঁচ দিন সময় যাচ্ছে। এতে প্রতি কৃষকের দিনে ৪০০ টাকা মজুরী হারে প্রায় ২ হাজার টাকার কর্মঘন্টাই নষ্ট হচ্ছে।

অন্যদিকে প্রতিজন কৃষকের কাছ থেকে মাত্র ২০০ কেজি ধান গুদামে নেয়া হচ্ছে। এ জন্য কেজি ২৬ টাকা হিসেবে ৫ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি মুল্য পাবে একজন কৃষক।

সদর খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে আসা কয়েকজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কমপক্ষে ১ টন করে ধান বরাদ্দ হলে গুদামে ধান দেয়া থেকে বিল উত্তোলন পর্যন্ত ৪/৫ দিন ঘুরেও খরচ পোষাতো। কিন্তু বরাদ্দের পরিমান কম হওয়ায় স্থানীয় বাজারেই ধান বিক্রি করাই ভাল।

উপজেলা সদর গুদামের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা অনিমেষ মজুমদার বলেন, ৩ মাসের মধ্যে প্রায় ৭০০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু চাষির নামে ধান বরাদ্দের পরিমাণ কম হওয়ায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার চাষির কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। গত এক মাসে মাত্র ৫০ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, অনেক কৃষককে সুযোগ দিতে গিয়ে কৃষক প্রতি ধানের বরাদ্দ কম করা হয়েছে।

এনএইচ/ রাতদিন