প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার আছে, সকলেই সমান অধিকার ভোগ করবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের সমউন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন,‘যখন আমরা উন্নয়নের কথা বলি তখন আমরা জাতি, ধর্ম বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের কথাই বলি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার, ৩০ আগস্ট সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠীর উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এখানে কাউকে এটা মনে করলে চলবে না যে, আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বা আসরা অবহেলিত সেটা ভাবলে চলবে না।’ ‘সকলকে ভাবতে হবে, এই দেশের নাগরিক সবাই এবং প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে। সকলেই সমান অধিকার ভোগ করবে বাংলাদেশে, ’যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পেশাকে ধরে রেখে এর সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘যে কোন কাজের একটি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং ঐতিহ্যগত গুরুত্ব রয়েছে। সেই গুরুত্বটা আমাদের দিতে হবে। যার যার পেশাকে ধরে রেখে এর আধুুনকায়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে হবে।’

‘বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩০ লাখ ৮৭ হাজার। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং ১৫ লাখ সমতলে বসবাস করে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘বৈচিত্রের মাঝেই ঐক্য হচ্ছে- বাংলাদেশের সংস্কৃতির এক উজ্জ্বলতম বৈশিষ্ট্য। ’ ‘এই যে নানা মানুষ, নানান ধর্ম, ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস- সবকিছু মিলে যে বৈচিত্র এটা কম দেশেই পরিলক্ষিত হয়,’যোগ করেন তিনি।

তাঁর সরকার দেশের সকল জনগোষ্ঠী এবং শ্রেণী পেশার জনগণের উন্নয়নের সমতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘ শিক্ষা-দীক্ষা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে যেন আমাদের সকল জনগগোষ্ঠী সমান সুযোগ পায়, কেউ যেন অবহেলিত না থাকে, কেউ যেন দূরে পরে না থাকে-সেটা নিশ্চিত করারই আমাদের লক্ষ্য এবং এ জন্য আজকের এই বৃত্তি প্রদানের অনুষ্ঠান।’


প্রধানমন্ত্রী এ সময় নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরিধান করে বৃত্তির চেক নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আসায় শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কাজের প্রয়োজনে সবাই আনুষ্ঠানিক পোশাক পরবে সেটা স্বাভাবিক তবে, নিজস্ব সংস্কৃতির স্বকীয়তাও মাঝে মাঝে প্রকাশ করার প্রয়োজন রয়েছে। তাতে আমাদের দেশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির যে বৈচিত্র তাও মেলে ধরার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়।’

তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের সরকার প্রদত্ত বৃত্তিসহ নানা সহযোগিতার সুযোগ গ্রহণ করে নিজেদের যোগ্য নাগরিকরূপে গড়ে তোলা এবং দেশ পরিচলনার কাজে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমি চাই সঠিকভাবে লেখাপড়া শিখে তোমরা নিজেদের যোগ্যরুপে গড়ে তুল রাষ্ট্র পরিচালনায় এগিয়ে আসবে এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোমরা অবদান রাখবে। পাশাপাশি নিজস্ব স্বকীয়তাটাও তোমরা বজায় রাখবে।’

শেখ হাসিনা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনে বাংলার জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,‘জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আবার তারা ভোট দিয়ে আমাদেরকে সরকার গঠন করে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছে।’

উল্লেখ্য, সমতলের ৫৫টি জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে “বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)” শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তবে, ২০০২ সালে তৎকালিন বিএনপি-জামায়াত সরকার কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেয় এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এসে এটি চালু করে এবং তা অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে।

এসকে/রাতদিন