ফেসবুকে কষ্টগাথা, প্রতিবন্ধী বৃদ্ধের পাশে ইউএনও

শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. বদিউজ্জামান (৭০)। স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানকে নিয়ে তাঁর পরিবার। গ্রামের একটি ঝুঁপড়ি ঘরে তাদের বসবাস । নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাষকান্দর তালতলা পাড়ার বাসীন্দা বদিউজ্জমান। দুর্ঘটনাজণিত কারণে দুই পায়ে ভর করে তিনি হাঁটতে পারেন না। তাই লাঠিতে ভর করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হয়।

তবে এভাবেই তিনি ছেলেমেয়েদের বড় করেন। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ফজলু ও শরিফুল দিনমজুরী করলেও সেই আয়ে সংসার চলে না। এরপরও বছর আটেক আগে কুড়িয়ে পাওয়া এক শিশুকেও বড় করছেন। তাই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও বৃদ্ধ বদিউজ্জামান এই বয়সেও কাঁধে করে শহরের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শাকসবজি বিক্রি করেন।

প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। অক্ষম পায়ে হেঁটেই গ্রাম থেকে শহরে এসে বিক্রি করেন শাক সবজি। সম্প্রতি ফেসবুকে বদিউজ্জামানের কষ্টের জীবনযুদ্ধের কাহিনী উঠে আসে। আর এটি নজরে আসে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম গোলাম কিবরিয়ার।

ফলে প্রতিবন্ধী ওই বৃদ্ধকে কাঁধে করে যাতে আর শাকসবজি বিক্রি করতে না হয়, সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি রিকশাভ্যান ও নগদ অর্থের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ উপজেলা পরিষদ চত্ত¡রে বদিউজ্জামানের হাতে রিকশাভ্যানসহ দুই হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে।

এ সময় সেখানে ছিলেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্জাহান মন্ডল, অনলাইন এক্টিভিটিস্ট নওশাদ আনসারী, তামিম রহমান, আলমগীর হোসেন, সুলতান, মোরসালিন ও সৈয়দপুরকে সিটি কর্পোরেশন চাই আন্দোলনের আহ্বায়ক তামিম রহমান।

ইউএনও এস এম গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বদিউজ্জামান। প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ হয়েও এই বয়সেও তিনি পরিশ্রম করে সংসার চালাচ্ছিলেন। এরপরও গ্রহণ করেনি ঘৃণিত পেশা ভিক্ষাবৃত্তি। এ জন্য তিনি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।’

এবি/রাতদিন