বঙ্গবন্ধু: সাধারণ জীবনযাপন, সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব

হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমান। স্বীয় মেধা, প্রজ্ঞা, মনন দিয়ে যিনি একটি জাতিসত্ত্বার উন্মেষ ঘটান পৃথিবীর মানচিত্রে। তাঁর সম্মোহনি ব্যক্তিত্ব, অতি সাধারন জীবনযাপন সর্বোপরী সংগ্রামী ব্যক্তিত্বের সামান্য কিছু অংশ রাতদিননিউজ পাঠকদের জন্য।

  • জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বয়স যখন মাত্র ১৩ বছর এবং বেগম ফজিলাতুন্নেসার বয়স যখন মাত্র ৩, তখন পরিবারের অভিভাবকেরা তাঁদের বিয়ে ঠিক করেন। তারা উভয়ই ছিলেন চাচাতো ভাই বোন। তবে বিয়ে হয় তারও ৫ বছর পর। যখন শেখ মুজিবের বয়স আঠারো।
  • আমাদের দেশের রাজনীতির ইতিহাসের একজন পাহাড়সম ব্যক্তি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার। এধরণের উচ্চতা একজন সাধারণ বাংলাদেশির মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল নিউজউইক সাময়িকীর প্রচ্ছদে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেয়া হয়। সাময়িকীটির প্রচ্ছদে একটি অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়, ‘একজন বাঙালি হিসেবে বেশ লম্বা (তাঁর উচ্চতা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি), ধূসর চুলের অধিকারী, ঘন গোঁফসমৃদ্ধ এবং কালো চোখের অধিকারী মুজিব তার র‌্যালিগুলোতে লাখো মানুষকে আকর্ষণ করতে পারেন।
  • অসাধারণ আবেগী বক্তৃতাগুলোর মাধ্যমে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারেন। তিনি একজন রাজনীতির কবি। এবং তার কথা বলার ধরনও রাজনৈতিক কবির মতোই, যার মাধ্যমে তিনি শ্রেণি এবং দর্শন ভেদে সকল ব্যক্তিকেই এক করতে পেরেছিলেন।’
  • বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেন ফিদেল ক্যাস্ট্রো। ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে কিউবার অমর বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎ ঘটে। বঙ্গবন্ধুকে আলিঙ্গন করে ক্যাস্ট্রো বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তার ব্যক্তিত্ব এবং সাহস হিমালয়ের মতোই। এভাবেই আমার হিমালয়কে দেখার অভিজ্ঞতা হয়।’
  • গ্রামীণ আবহে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুর খেলাধুলার প্রতি বেশ আগ্রহ ছিলো। ‘তিনি ছিলেন বেশ রোগা এরপরও তিনি ফুটবল খেলে বেড়াতেন,’ ১৯৯৮ সালের ১২ জুন এশিয়াউইক সাময়িকীর একটি বিশেষ সংখ্যায় ‘মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে একটি লেখায় নিজের বাবার ছেলেবেলাকে এভাবেই বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা।

চৌত্রিশ থেকে পঁচাত্তর:

  • ১৯৩৪-চোখের আঘাতের কারণে প্রায় অন্ধ হতে বসেছিলেন।
  • ১৯৩৯-প্রথমবারের মত শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে সাক্ষাৎ।
  • ১৭ মার্চ ১৯৪৮-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন । ৬ মার্চ ১৯৪৯- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত।
  • ১ মার্চ ১৯৬৬-আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত।
  • ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯– আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার এবং বিচার।
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯– তোফায়েল আহমেদ সম্মানসূচক বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন।
  • ৭ ডিসেম্বর ১৯৭০– সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে নেতৃত্ব দেন।
  • ৭ মার্চ ১৯৭১– ঢাকার রমনার রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহসিক ভাষণ দেন।
  • ২৬ মার্চ ১৯৭১-মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে গ্রেফতার পশ্চিম পাকিস্তানে সাড়ে নয় মাস কারাবাস।
  • ৮ জানুয়ারি ১৯৭২-পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি, দুইদিন পর স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন। ১২ জানুয়ারি,
  • ১৯৭২– রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ।
  • ১৯৭৩-আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে নেতৃত্বদান।
  • ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪-জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দান।
  • ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫– বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন এবং সব দলকে একীভূত করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৫ আগস্ট ১৯৭৫– ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে নিজ বাসভবনে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে তাকে হত্যা করা হয়।

জেএম/রাতদিন