ক্যান্সার আক্রান্ত বাবার চিকিৎসার টাকা যোগাতে জীবন বিসর্জন দিলো পীরগঞ্জের স্কুল ছাত্র পরিমল (১৪)। নির্মান শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় ঢাকার সাভারে নির্মানাধীন একটি তুলার ফ্যাক্টরীর ছাদের বীম ধ্বসে পড়ে মারা গেছে সে।
শনিবার, ৩১ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওইদিনই সন্ধ্যায় পীরগঞ্জ উপজেলার বড় করিমপুর গ্রামে তার লাশ দাহ করা হয়।
পারিবারিক ও একাধিক সুত্র জানিয়েছে, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের রমেশ চন্দ্র ক্যান্সারে এবং তার স্ত্রী পুতুল রানী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন থেকে ধুকছেন। রমেশ দম্পতির একমাত্র বড় ছেলে পরিমল চন্দ্র স্থানীয় হাতিবান্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র।
বাবা-মার চিকিৎসার টাকা যোগাতে প্রায় ৯ মাস আগে ঢাকায় নির্মান শ্রমিকের কাজ করার জন্য যায় পরিমল। অর্থাভাবে গত বছর পরিমল জেএসসি’র ফরম পুরন করতে না পারায় পরীক্ষাও দিতে পারেনি। গত ঈদুল আজহার পর ১৬ আগষ্ট পরিমল লেখাপড়া ছেড়ে আবারো ঢাকার সাভারে নির্মান শ্রমিকের সহকারী হিসেবে কাজে যায়। পাশাপাশি সে এবারে জেএসসি পরীক্ষা দিতে ফরম পুরনও করেছে।
কিন্তু সাভারে নির্মানাধীন একটি তুলার ফ্যাক্টরীর ছাদের বীম পরিমলের উপর ধ্বসে পড়লে নিভে যায় পরিমলের সকল আশার প্রদীপ।
পরিমলে মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে এলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়।
হাতিবান্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী বলেন, টাকার অভাবে পরিমল গত বছর ফরম পুরন করতে পারেনি। এবারে ফরম পুরন হলেও পরিমল চিরতরে পৃথিবী থেকে চলে গেল।
অপরদিকে পরিমলের বাবা রমেশ চন্দ্র শব্দ করে কাঁদতে পারছেন না। শুধু নির্বাক নয়নে ছেলের মরদেহের দিকে তাকিয়ে থাকছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্পীকার ড. শিরীন শারমনি চৌধুরীর কাছে আর্থিক সাহায্যা কামনা করেন ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম।
জেএম/রাতদিন