বিএসএফ’র গুলি আলাদা করে দিলো হাতীবান্ধার দুই সুরুজকে

দু’জনের নামই সুরুজ মিয়া। বয়সে পার্থক্য থাকলেও একসাথে বেড়ে উঠেছে দুজনই। বন্ধুর মত মিলেমিশে পৃথিবীর আলো-বাতাসে একাকার ছিলো দুটি আত্মা। পৃথিবীর কোন কিছুই তাদের আলাদা করতে না পারলেও ভারতীয় বিএসএফ তাদের আলাদা করে ফেলল।

বুধবার, ২২জানুয়ারি সকালে হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তের ৯০৭/৪-এস নম্বর মেইন পিলারের সাব পিলার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দুই সুরুজ।

দুই সুরুজের একজন, হাতীবান্ধা উপজেলার দৈখাওয়া সীমান্তের পূর্ব আমঝোল গ্রামের উসমান আলীর ছেলে সুরুজ মিয়া (১৮) অন্যজন শাহজাহান আলীর ছেলে সুরুজ মিয়া(৩৩)। দুজনই এক গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় দু’জন গালামাল (মুদির দোকান) ব্যবসায়ি।

জানা গেছে,হাতীবান্ধা উপজেলার দৈখাওয়া সীমান্তের পূর্ব আমঝোল গ্রামের দুই সুরুজ গালামাল ব্যবসার পাশাপাশি একেক সময় একেক কাজ করতেন। গত সোমবার রাতে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন দুজনে। ওইসব ছিন্নমূল মানুষের কাছে দোয়াও নিয়েছিলেন তারা। হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় তাই গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে ধূমপান করতে বাড়ীর পাশের সীমান্তে যায় তারা। এ সময় ভারতের কোচবিহার বিএসএফ ব্যাটালিয়নের একটি টহল দল চোরাচালানী সন্দেহে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান, আরেক সুরুজকে আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।

এলাকাবাসীর দাবী, তারা কোন চোরাচালানের  সাথে জড়িত ছিলো না। ভারতীয় বিএসএফ কেন দুজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলো এ দাবী তুলে হত্যার বিচার প্রার্থণা করেন এলাকাবাসী।

এদিকে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ওসি ওমর ফারুক। 

লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম তৈহিদুল ইসলাম রাতদিননিউজকে জানান, বিএসএফ এর কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহবান করা হয়েছে। পতাকা বৈঠকে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হবে।

এনএ/রাতদিন